বাসস
  ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৫২

বন্দরে বিনিয়োগ হলে অঞ্চলের উন্নতি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় : নৌপরিবহন উপদেষ্টা

উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন আজ চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ছবি : বাসস

চট্টগ্রাম, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, বন্দরে বিনিয়োগ হওয়া মানে এ অঞ্চলের উন্নতি ও লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়া। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন শেষে বন্দরের ১ নম্বর গেটের সার্ভিস এরিয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

বন্দর কেন্দ্রিক প্রচুর বিনিয়োগ আসছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বিশেষ করে বে-টার্মিনাল ও লালদিয়া। লালদিয়ার পাশে আরেকটি জায়গা নেওয়ার জন্যও তারা আলাপ আলোচনা করছেন। তিনি বলেন- আমরা আশাকরি আগামী চার-পাঁচ মাসের মধ্যে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সঙ্গে একটি চুক্তি হবে। বিশ্বব্যাংকের ৬৫০ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আছে এখানে। বিশেষ করে চ্যানেল তৈরি করা, ব্রেকওয়াটার নির্মাণ। আমার কাছে মনে হয় এটাই সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ এর মধ্যে। বন্দরে বিনিয়োগ হওয়া মানে এ অঞ্চলের উন্নতি ও লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়া। 

ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, টেকনাফ পোর্টটি আমরা স্থলবন্দর বললেও কিন্তু সেটা না। এটা হয়তো নৌ বন্দরে পরিণত হবে। অথবা আন্তর্জাতিক কোনো বিষয় থাকলে দেখা যাবে, এটা সিপিএ’র (চট্টগ্রাম পোর্ট অথরিটি) অধীনে হতে পারে।

তিনি বলেন, আমি আগামীকাল কক্সবাজার যাবো, পরশু টেকনাফে যাবো। টেকনাফে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের একটা বন্দর আছে, সে জায়গাটি দেখবো। ওখানে কিছু ইনপুট হয়, সেটি দেখবো। একই সঙ্গে ঘুমধুম বলে একটা জায়গা আছে, যেটা আরাকান বা রাখাইনের সঙ্গে আমাদের ল্যান্ড কানেকশন। ভবিষ্যতের দিকে নজর রেখে দেখব, সেখানে একটা স্থলবন্দর করা যায় কি না। কারণ, আগামীতে মিয়ানমারে যাই থাকুক না কেন, আমাদের সঙ্গে রাখাইন রাজ্যের একটা সম্পর্ক আগেও ছিল এবং থাকবে। যেহেতু সেখানে রোহিঙ্গারা ওই এলাকার। কাজেই ওটাও দেখবো, ভবিষ্যতের জন্য প্ল্যান করে রাখবো, যাতে ওখানে একটা স্থলবন্দর করা যায়।

আমদানি না হওয়া আটটি স্থল বন্দর চিহ্নিত করার কথা জানিয়ে নৌ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি ৮ স্থল বন্দরকে শনাক্ত করেছি, যার একপাশে আমদানি নেই। ১০ বছর হয়ে গেছে, কিন্তু এক পয়সারও আমদানি নেই। আমরা রাজস্ব থেকে সেখানে খরচ করছি। এগুলো যাতে কিছু করা যায় বা বন্ধ করার কী প্রক্রিয়া হবে আমি ফিরে গিয়ে দেখবো।’

চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি মোংলা বন্দর উন্নয়নের চেষ্টার কথা জানিয়ে উপদেষ্টা ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ইতিমধ্যে মোংলা পোর্টকে আপগ্রেড করার চেষ্টা চলছে। ওই বন্দরকে আমরা একটি উন্নতমানের পোর্টে আনতে যাচ্ছি। সেটার জন্য আমাদের একটি চাইনিজ প্রকল্প পাস হয়েছে। আশা করি, সেটা অচিরেই কাজ শুরু হবে। সে প্রকল্পে প্রায়ই ৬০০ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। বাংলাদেশে এর আগে কখনও এরকম হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।’

চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার জট কমে যাওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগের আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে বলে মন্তব্য করে সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যকারিতা বিগত ছয়মাসে অনেক বেড়েছে। আগামীতে আরও বাড়বে। সেজন্য আমাদের জায়গা দরকার। আপনারা দেখেছেন কনটেইনার কি রকম জ্যাম হয়ে গেছে। নিলামে সেগুলো চলে গিয়ে কিছু জায়গা হবে। 

আইনি কাঠামো পরিবর্তন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বছরের পর বছর যাতে বন্দরে জঞ্জাল পড়ে না থাকে সেজন্য আইনি কাঠামোতে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। পরিবর্তনের প্রক্রিয়াগুলো এখনো প্রক্রিয়াধীন। এটা হয়ে গেলে পণ্য ১০-১৫ বছর পড়ে থাকবে না। অতিসত্ত্বর এগুলো নিলাম হবে। আইনি জটিলতার কারণে কাস্টমস নিলাম করতে পারছিলো না।