শিরোনাম
ঢাকা, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, হাইকমিশনার এখানে না থাকায় আমরা ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারকে তলব করতে বলেছি এবং তার কাছে আমাদের প্রতিবাদলিপি হস্তান্তর করেছি।
তিনি বলেন, ঢাকা এর আগে শেখ হাসিনাকে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া থেকে বিরত রাখতে নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল, কিন্তু আমরা কোনো সাড়া পাইনি।
হোসেন বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ আবারও ভারতীয় ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার পবন বাধের মাধ্যমে তাদের আপত্তি জানিয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বক্তব্যকে অত্যন্ত আক্রমণাত্মক হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, এতে তারা তরুণ প্রজন্মের অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে বলে ইঙ্গিত করে।
শেখ হাসিনা যাতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকেন তা নিশ্চিত করতে ভারতের প্রতি বাংলাদেশ আহ্বান অব্যাহত রেখেছে উল্লেখ করে হোসেন বলেন, ‘ভারত কী পদক্ষেপ নেয় তা আমরা পর্যবেক্ষণ করব।’
ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পূর্ববর্তী চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, হোসেন মন্তব্য করেন যে আদানির সঙ্গে চুক্তি বাংলাদেশের সর্বোত্তম স্বার্থে ছিল না।
হাসিনার কার্যকলাপ সম্পর্কে ভারতের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত দাবি করেছে তারা তাকে অনলাইনে বক্তৃতা দেওয়ার প্ল্যাটফর্ম প্রদান করছে না।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে কভারেজের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেন বলেন, ‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বেগসহ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করছি আমরা। তবে, আমরা এটিকে জনসাধারণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করি।
এদিকে, এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ক্রমাগত মিথ্যা ও বানোয়াট মন্তব্য ও বিবৃতি বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের মন্তব্য ও বিবৃতি বাংলাদেশের জনগণের অনুভূতিতে আঘাত করায় মন্ত্রণালয় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের কাছে হস্তান্তর করা এক প্রতিবাদলিপির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের গভীর উদ্বেগ, হতাশা ও গুরুতর আপত্তির কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, শেখ হাসিনার এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের প্রতি শত্রুতামূলক আচরণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং দুই দেশের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টার অনুকূল নয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার চেতনায় অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে তিনি (শেখ হাসিনা) ভারতে অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার করে এ ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
এ সময় এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।