ঢাকা, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া খালাসের রায় বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি আগামীকাল।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আগামীকাল রোববারের কার্যতালিকার ৫ নম্বর ক্রমিকে বিষয়টি শুনানির জন্য নির্ধারিত রয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক বাসস'কে বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টের রায় বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। সে আবেদনটি চেম্বার আদালত হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের শুনানির জন্য এসেছে। আগামীকাল বিষয়টি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রয়েছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করে গত ২৭ নভেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বেগম খালেদা জিয়া ও অপর দু’জনের আনা পৃথক আপিল মঞ্জুর করে তাদের খালাসের রায় দেন।
বেগম খালেদা জিয়ার পাশাপাশি খালাস পাওয়া অপর দু’জন হলেন- হারিস চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম ও সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের পতন হয়। গত ৬ আগস্ট বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ওইদিন বঙ্গভবনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানেরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
সিনিয়র এডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, বেগম খালেদা জিয়া কোনো অনুকম্পা চান না। তিনি আইনিভাবে মামলা নিষ্পত্তি করতে চান। এ কারণে আমরা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে আইনি লড়াই চালিয়ে যাই। সবপক্ষকে শুনে হাইকোর্ট খালাস দিয়ে রায় দিয়েছেন। এর আগে আপিল শুনানির জন্য আদালত আমাদের নিজ খরচে পেপারবুক প্রস্তুত করার অনুমতি দেয় উচ্চ আদালত।
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। একইসঙ্গে অন্য তিন আসামিকেও সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন বিচারিক আদালত। খালেদা জিয়াসহ প্রত্যেককে জরিমানাও করা হয়। এছাড়া ট্রাস্টের নামে কেনা কাকরাইলে ৪২ কাঠা জমি বাজেয়াপ্ত করে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে নেয়ার আদেশ দেয়া হয়। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া।
এ মামলায় বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় জামিন চেয়ে ন্যায়বিচার পাননি তিনি। এক পর্যায়ে সরকার নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তি দেয়।
বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, তিনি কোনরূপ অনুকম্পা নয় আইনের লড়াইয়ের মাধ্যমে মামলা মোকাবেলা ও নিষ্পত্তি করতে চান। সে অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়া আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।