শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পালন করা হয়েছে পবিত্র শবে বরাত।
শবে বরাতের রাতে শুক্রবার মাগরিবের নামাজের পরপরই বার আউলিয়ার পূণ্যভূমি খ্যাত চট্টগ্রামের মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ঢল নামে।
ধীরে-ধীরে লোকে-লোকারণ্য হয় মসজিদ ও সংলগ্ন সড়ক, অলিগলি। নগরজুড়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ উৎসবমুখর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নগরীর বেশকিছু মসজিদে বর্ণিল আলোকসজ্জাও দেখা গেছে।
নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ এবং আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের সামনের সড়কসহ আশপাশের এলাকায় আতর, টুপি, মেসওয়াক, তসবিহ, আগরবাতি, মোমবাতি, জায়নামাজ, পাঞ্জাবি, নামাজ শিক্ষা ও দোয়া-দরুদের বই, মুখরোচক নানা খাবার, শরবত, চায়ের স্টলসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা দেখা যায় গভীর রাত পর্যন্ত। চট্টগ্রামের এ দু’টি বড় মসজিদে হাজার-হাজার মুসল্লির সমাগম ঘটে শবে বরাতের রাতে।
শুধু মসজিদ নয়, নগরীতে মুসলিম ধর্মাবলম্বী সাধকদের ঐতিহাসিক মাজারগুলোতেও উপচেপড়া ভিড় তৈরি হয়। নগরীতে শাহসুফি হজরত আমানত খান শাহের দরগাহ মসজিদ, মিসকিন শাহ’র মাজার, গরীব উল্লাহ শাহ’র দরগাহও প্রতিবছরের মতো লোকে-লোকারণ্য হয়ে উঠে মহামান্বিত এই রাতে।
নগরীর বাইরে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ঐতিহাসিক মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফেও যেন লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। নানা বয়সী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন, ধনী-গরীব নির্বিশেষে এক কাতারে এসে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে রাতটি পার করেছেন। মসজিদে-মসজিদে পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য ও ফজিলত নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরপর মিলাদ মাহফিল, দরুদ, জিকির, কিয়াম, দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে স্বজনদের কবর জিয়ারতেও ছুটেছেন অনেক মুসল্লি।
জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে এশার নামাজ, মিলাদ ও মোনাজাত শেষে লালখান বাজারের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, সেই ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে শবে বরাতের নামাজ পড়তে আসতাম। এখনো প্রতিবছর আসি। কিন্তু বাবা নেই। এখন বাবার দেখানো পথে এশার নামাজ জামাতে আদায় করে শবে বরাতের নফল নামাজ পড়ে বাবার কবর জিয়ারতে যাই। সঙ্গে নিয়ে যাই ছেলেকেও।
তিনি জানান, শবে বরাত হচ্ছে গুনাহ মাফ চাওয়ার রাত, ভাগ্যবণ্টনের রাত। আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দিনে নফল রোজা রাখি, রাতে কোরআন তেলাওয়াত, জিকির, মিলাদ, মোনাজাত, তাহাজ্জুদ, সেহেরি এবং ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করি।