কুমিল্লা, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, এটিএম আজহারুল ইসলামের রায় কোন বাংলাদেশের আদালতের রায় নয়। এই রায় হয়েছে ভারতের মোদির গোপন বৈঠকে।
তিনি বলেন, আমাদের নেতা-কর্মীদের ফাঁসি হয়েছে ভারতের দালালদের রায়ে। নিজামীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি হয়েছে ভারতের কূটচালে।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে কুমিল্লা টাউন হলে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার এগুলাকে কায়েম করেছে। আমরা ভারতের রায় মানি না। ভারতের আধিপত্যবাদ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। বিগত দিনে ভারতের সাথে সম্পাদিত সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। সুতারাং, যারা ভারতের দালালি করবে, তাদের পরিণতি হাসিনার মত হবে।
জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহাল ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করে কুমিল্লা মহানগর ও জেলা জামায়াত।
কুমিল্লা মহানগরী জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদের সভাপতিত্বে মিছিল পূর্বসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতে আমির মোহাম্মদ শাহজাহান, উত্তর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল মতিন, মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমীর মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দিন, অধ্যাপক এ কে এম এমদাদুল হক মামুন, দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী ড. সৈয়দ সরোয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, উত্তর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক আলমগীর সরকার, সেক্রেটারী সাইফুল ইসলাম শহীদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ইসলাহী ও কুমিল্লা মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি মো. হাসানসহ অন্যরা।
সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আরও বলেন, এই সরকারের ব্যর্থতার অন্যতম একটি হচ্ছে আজহারুল ইসলামকে মুক্তি না দেওয়া। আজহারুল ইসলামের সকল মামলার নিষ্পত্তি করে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
আজহারুল ইসলামের মুক্তির জন্য সারাদেশের নেতাকর্মীরা রক্ত দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সমাবেশে ডা. তাহের আরো বলেন, দেশবাসী আশা করেছিল যে, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার এটিএম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ৬ মাস ৯ দিন অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের বিচারিক কার্যক্রমসমূহ সারা বিশ্বে বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত। স্বৈরাচারের আমলে গ্রেফতারকৃত এটিএম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটক রাখা তার প্রতি চরম জুলুম ও অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে তাকে এখনো আটক রাখায় জাতি বিস্মিত ও হতবাক। সমাবেশ শেষে টাউন হল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ গ্রহণ করেন মহানগর জামায়াতে সহকারী সেক্রেটারি কামারুজ্জামান সোহেল, মোশারফ হোসাইন, নাছির আহম্মেদ মোল্লা ও দক্ষিণ জেলা জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারী মাহফুজুর রহমান।
সমাবেশ ও মিছিল উপলক্ষে দুপুর ২টা থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে টাউন হলে আসতে শুরু করে নেতা-কর্মীরা। ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিপুল সংখ্যক সদস্যও এতে যোগ দেন। মুহূর্তেই পুরো এলাকা মিছিলের নগরীতে রূপ নেয়।