চট্টগ্রাম, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): মিয়ানমারে আটকা পড়া ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে তাদের অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দেশীয় কূটনৈতিক পর্যায়ে দীর্ঘ আলোচনার পর তাদের সেই দেশের জেল থেকে মুক্ত করে সমুদ্রপথে আনা হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। তাদের অভিভাবকের জিম্মায় দিতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কামরুজ্জামান বলেন, ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিক ফেরত এসেছেন। তাদের প্রত্যেকজনের অভিভাবকরা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে এসেছেন। তাদের আমরা অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করেছি। যারা ফেরত এসেছেন তাদের জন্য অনেক শুভ কামনা।
তিনি আরও বলেন, বিদেশ গমনের ক্ষেত্রে বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আপনারা যাবেন। অবৈধ প্রক্রিয়ায় যেতে গিয়ে আপনারা এ ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। আপনারা বিদেশে যাওয়ার আগে অবশ্যই এজেন্সি যাচাই-বাছাই করে নিবেন। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রতারণার শিকার হচ্ছেন গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো। তাদের সচেতন হতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, এই ২০ জন নাগরিক ছাড়াও মিয়ানমারে যারা আটক আছেন তাদেরকেও ফেরানোর প্রক্রিয়ার কাজ আমরা শুরু করবো। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। এরপরেও আমরা বাকিদের ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
ফেরত আসা জোবায়েদ হোসেন জুয়েলের (১৫) মা রেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘দালালের খপ্পরে পড়ে আমার ছেলেটা মালেশিয়া যেতে চেয়েছিল। আমাদের কিছু না বলেই সে চলে গিয়েছিলো। তাকে অনেকদিন খুঁজে না পাওয়ায় যোগাযোগ করে দেখি আমাদের হোয়াইকং ও আশেপাশের উখিয়া, টেকনাফ, কক্সবাজারের অনেক ছেলে দালালের লোভে পরে চলে গেছে।’
দালাল চক্রের কথা জানতে চাইলে জোবায়েদ হোসেন জুয়েল বলেন, ‘দালালরা আমাদের বড় বোটে তুলে দেওয়ার পর তারা চলে যায়। এখানে মূলত কালা মানিক নামে একজন আমাদেরকে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। তার অনেক সহযোগীও আছে। তারা সবাই আমাদেরকে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা বলে আমাদের ছেড়ে দিয়েছে।’
ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন, জুবায়েদ হোসেন জুয়েল, সরওয়ার কামাল, তারেক মনোওয়ার, নাজিম উদ্দীন, নূর মোহাম্মদ, মো. নজরুল ইসলাম, মো. খোকন, মো. ফাহিম, মো. হাশেম, মো. আব্দুল্লাহ, মনসুর আলম, মো. মোবারক, রফিকুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, রবিউল আলম, মোহাম্মদ হেলাল, রফিকুল ইসলাম, মো. ফয়সাল, মো. সাজ্জাদ, মো. আসাদ।