মানহীন মেডিকেল কলেজ বন্ধ ও ব্রেইন ড্রেইন রোধের সুপারিশ স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের

বাসস
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ২০:০৬
ছবি : পিআইডি

ঢাকা, ১১ মে, ২০২৫ (বাসস) : মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধের সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন। একইসঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরে আসার সুযোগ তৈরি ও ‘ব্রেইন ড্রেইন’ রোধের সুপারিশ করা হয়েছে। সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন পেশ করেন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন কমিশনের সদস্যরা। ওই প্রতিবেদনে নানা প্রস্তাব ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এরমধ্যে স্বল্পমেয়াদি ও মধ্যমেয়াদি ৩২টি মুখ্য সুপারিশ রয়েছে। সেখানে ১২ নম্বর সুপারিশে চিকিৎসাশিক্ষা সংস্কারের বিষয়টি উঠে আসে।

সুপারিশে বলা হয়েছে- চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে একটি সমন্বিত, নীতিনির্ভর এবং কাঠামোগত সংস্কার অপরিহার্য। নিম্নোক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন, জনস্বাস্থ্য চাহিদা, ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত, প্রতিষ্ঠান সক্ষমতা এবং ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশন (ডব্লিউএফএমই) এর গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে দেশের সকল মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম নিয়মিত মূল্যায়ন করতে হবে। মূল্যায়নের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন, প্রতিষ্ঠান সংখ্যা ও আসন সংখ্যা পুনর্বিন্যাস করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করতে হবে। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষতি এড়াতে তাদের অন্যান্য স্বীকৃত মেডিকেল কলেজে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ক্ষেত্রে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন ফর মেডিকেল এডুকেশনের মানদণ্ড অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। পাঁচ দিনের একাডেমিক সপ্তাহ চালু করে শিক্ষার কাঠামো উন্নত করতে হবে, যাতে ছাত্রদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পায় এবং শিক্ষকদের ওপর কাজের চাপ কমে। ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি প্রক্রিয়ায় অপ্রয়োজনীয় বাধা অপসারণ করে ‘ব্রেইন ড্রেইন’ রোধ এবং প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরে আসার সুযোগ তৈরি করতে হবে।

সুপারিশে আরও বলা হয়, এফসিপিএস ও এমডি/এমএস কোর্সসমূহে পাঠ্যক্রমে সমন্বয় আনতে হবে এবং দেশবিদেশে পারস্পরিক স্বীকৃতি নিশ্চিত করে স্নাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষার আন্তর্জাতিক মান বৃদ্ধি করতে হবে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে কম্পিটেন্সি বেইজড মেডিকেল এডুকেশন (সিবিএমই) এবং কমিউনিটি ওরিয়েন্টেড মেডিকেল এডুকেশন (সিওএমই) কার্যকরভাবে চালু করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান, দক্ষতা ও পেশাগত আচরণে পূর্ণ সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

সরকার ২০২৪ সালের নভেম্বরে ১২ সদস্যের স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন গঠন করে। কমিশনের প্রধান হিসেবে রয়েছেন ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান।

কমিশনের সদস্য হিসেবে আরও আছেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) জনস্বাস্থ্য ও হেলথ ইনফরমেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক মো. মুহাম্মদ জাকির হোসেন, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সায়েবা আখতার, শিশু নিউরো বিজ্ঞান বিভাগের নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নাইলা জামান খান, সাবেক সচিব এম এম রেজা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মুজাহেরুল হক, আইসিডিডিআরবি’র ডা. আজহারুল ইসলাম, স্কয়ার হাসপাতালের স্কয়ার ক্যান্সার সেন্টারের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, গ্রিন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চের প্রধান পরামর্শক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, আইসিডিডিআরবি’র বিজ্ঞানী ডা. আহমেদ আহসানুর রহমান এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ওমায়ের আফিফ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নাটোরে বাস-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ২
চাঁদপুরে ১৩ জনকে ব্ল্যাক বেল্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান
জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত : এটিএম মাসুম
ইরান-ইসরাইল সংঘাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে : এরদোয়ান
ময়মনসিংহে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত, আহত ২০
অনূর্ধ্ব-১৯ সিক্স-এ-সাইড ক্রিকেট দিয়ে টেস্ট মর্যাদার ২৫ বছর উদযাপন করবে বিসিবি
বিদেশের মাটিতে প্রথম ফাইফার নাইমের
ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলেছে তারাই জেল খেটেছে : এ্যানি
দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ময়দানে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে : শফিকুর রহমান
তারেক রহমানের ফেরার প্রস্তুতি চলছে : আমীর খসরু
১০