কুষ্টিয়া, ১২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষণে সরকার কাজ করছে।
তিনি বলেন, দেশের শিল্প কারখানা ও শ্রমঘন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার, নিরাপদ কর্ম পরিবেশ, শ্রমিকের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে সুরক্ষায় ২০০৬ সালের শ্রম আইনের আলোকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
আজ শনিবার কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে শ্রম সচিব জেলার ট্রেড ইউনিয়নভুক্ত সকল সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন।
এর আগে তিনি কুষ্টিয়ায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নবনির্মিত ৬তলা ভবনের উদ্বোধন করেন।
এ সময় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপমহাপরিদর্শক ফরহাদ ওয়াহাবসহ সকল কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘শ্রমিক স্বার্থ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শ্রম মন্ত্রণালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নানা মুখী কার্যক্রম করছেন।
এসব কর্মকাণ্ডের সুফল যাতে প্রকৃত ভুক্তভোগী শ্রমিকসহ আরও অনেক বেশি সুবিধাভোগী শ্রমিকদের দোরগোড়ায় দালালমুক্ত উপায়ে পৌছে দেয়া যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
অনুষ্ঠানে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাদের দু:খ বেদনার চিত্র তুলে ধরেন এবং শ্রম আইন অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নের দাবি জানান।
দেশের বৃহৎ চালের মোকাম কুষ্টিয়ার খাজানগর চাতাল শ্রমিক সমিতির সভাপতি মমতাজ আলী বলেন, ‘দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প খাত হিসেবে স্থান করে নেয়া কুষ্টিয়া চালের মোকামে ছোট বড় চার শতাধিক মিলে প্রায় ২৫ হাজার চাতাল শ্রমিক কাজ করে। অথচ এদের কারো কোন নিয়োগপত্র নেই। নেই কোন ন্যূনতম শ্রমিক অধিকার, না আছে সঠিক মজুরি, নেই কোন কাজের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ঝুঁকির কোন দায় এখানকার মিল মালিকরা বহন করে না তাই শ্রম মন্ত্রণালয় এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপে এখানে ট্রেড ইউনিয়নসহ ন্যায্য অধিকার আদায়ের দাবি করছি’।
একইভাবে রাস্তায় মালামাল ও যাত্রী পরিবহণ শ্রমিকদের নানা ভোগান্তি ও হয়রানির চিত্র তুলে ধরেন শ্রমিক নেতা বাবুল হোসেন। তার অভিযোগ প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে তাদের কোনো নিয়োগপত্রও নেই। কোনো কর্মঘণ্টারও ঠিক নেই।
কুষ্টিয়া জেলা স্বর্ণ শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান বলেন, 'কর্মক্ষেত্রে তাদের সুপেয় পানি ও পয়ঃব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়। এছাড়া দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে আবেদনের পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তার কোন ফলাফল পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কুষ্টিয়া জেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজন মালিথা জেলায় কর্মরত নির্মাণ শ্রমিকদের দু:খ দুর্দশা ও মানবেতর জীবনের চিত্র তুলে ধরে কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় আহত-নিহত শ্রমিক ও তাদের পরিবাবের নিরাপত্তা দাবি করেন।