রংপুর, ৫ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে আলমবিদিতর ও নোহালী ইউনিয়নের ১১টি গ্রাম। মাত্র দুই মিনিটের এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাত শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ৮টার দিকে আকস্মিক ঝড়ো হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় কাঁচা ও ইটের অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ে, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয় এবং কৃষি জমি ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে। ঝড়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুশিক্ষার্থীও রয়েছে।
আলমবিদিতর ইউনিয়নের কুতুব হাজীরহাটের বাসিন্দা নাজমুল হোসেন বলেন, হঠাৎ এমন ঝড় উঠবে ভাবতেই পারিনি। চোখের সামনে ঘরের চাল উড়ে গেল, ভেতরের জিনিসপত্র ভিজে একাকার। পরিবার নিয়ে এখন পাশের স্কুলে আশ্রয় নিয়েছি।
একই এলাকার সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার ধানক্ষেত পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে দাঁড়ানো ফসল এখন পানির নিচে। সংসার চালানোই এখন চিন্তার বিষয়। বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় মাথায় আঘাত পেয়েছে আমার ছেলে, এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
কুতুব গ্রামের সফিয়ার রহমান জানান, ঘরবাড়ি ভেঙে সব শেষ। বাচ্চারা কাঁদছিল, কোথায় আশ্রয় নেব বুঝতে পারছিলাম না। এখন প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া আমাদের বাঁচার উপায় নেই।
আলমবিদিতর ইউনিয়নের প্রশাসক ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আফতাবুজ্জামান চয়ন জানান, তাদের ইউনিয়নে ৩০০ এর বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নোহালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফ আলী জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ৪০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। তিনি বিষয়টি দ্রুত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সজিবুল করীম জানান, ঘূর্ণিঝড়ে কয়েক শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে জরুরী ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের জন্য ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের টিম মাঠে নেমেছে। ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পর্যায়ক্রমে সহায়তা প্রদান করা হবে।