ঢাকা, ৫ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : অর্থ আত্মসাৎ, পাচার, অনৈতিক আর্থিক লেনদেন, হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগে চারটি প্রতিষ্ঠানে পৃথক এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ দুদকের প্রধান কার্যালয়ের জনসংযোগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দুদক জানায়, মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলায় কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ এবং এডিপি প্রকল্পের অর্থায়নে ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কালভার্ট-সেতু নির্মাণের অভিযোগে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান পরিচালনাকালে মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বক্তব্য গ্রহণ করা হয় এবং কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বরাদ্দ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। রেকর্ডপত্রের আলোকে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে মর্মে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়।
অপর অভিযোগের সত্যাসত্য যাচাইয়ের নিমিত্তে এনফোর্সমেন্ট টিম মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের ছয়না গ্রামে পাথরিয়া পাড় রাস্তা সংলগ্ন ৯ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি কালভার্ট সরেজমিন পরিদর্শন করে। পরিদর্শনে দেখা যায়, উক্ত কালভার্টটি কেবলমাত্র একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ির যাতায়াতের সুবিধার্থে নির্মিত হয়েছে। এনফোর্সমেন্ট টিমের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, উক্ত কালভার্ট কোনো প্রকার জনস্বার্থে নির্মিত হয়নি, বরং প্রকল্পের সরকারি বরাদ্দের ৩২ লক্ষ টাকা ব্যক্তিস্বার্থে সরকারি অর্থের অপব্যবহার এবং ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে, পূর্বাঞ্চলের শতকোটি টাকার পুরাতন মালামাল ও স্ক্র্যাপ সংঘবদ্ধ অসাধু চক্রের মাধ্যমে পাচারের অভিযোগে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান পরিচালনাকালে সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে অভিযোগ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যাদি ও রেকর্ডপত্রাদি সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমিকভাবে সংগৃহীত রেকর্ডপত্রাদি পর্যালোচনায় অভিযোগের সত্যতা রয়েছে মর্মে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়।
অন্যদিকে, দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা প্রদানে হয়রানি ও নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে দেখা যায়, হাসপাতালে রোগীদের সেবা প্রদানে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক উপস্থিত না থাকায় রোগীরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এছাড়া রোগীদের খাবার সরবরাহে নানাবিধ অনিয়ম এনফোর্সমেন্ট টিমের নিকট পরিলক্ষিত হয়। অভিযানকালে উক্ত হাসপাতালের দায়িত্বরত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে উদ্ঘাটিত অনিয়মসমূহ সম্পর্কে অবহিত করা হয় এবং তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন। অভিযানকালে অন্যান্য অভিযোগসংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে খুলনা ও রাজশাহী নগরে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের নিমিত্তে অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে পৃথক একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান পরিচালনাকালে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় তথ্যাদি ও রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। প্রাথমিকভাবে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা ও প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণক্রমে উক্ত অভিযোগের সত্যতা বিদ্যমান মর্মে প্রতীয়মান হয়।
দুদক জানায়, অভিযান শেষে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্রের বিস্তারিত পর্যালোচনা শেষে টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।