ঢাকা, ১০ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের সর্ববৃহৎ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
আজ শুক্রবার গাজীপুরের মাওনায় একটি রিসোর্টে আয়োজিত ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের জন্য অনলাইন প্রশিক্ষণ কনটেন্ট উন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালা’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ প্রতিশ্রুতি দেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি বলেন, “জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারী মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ৭০ শতাংশ। তাদের প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে দক্ষ করে তুলতে পারলে দেশ এক বিশাল জনসম্পদ অর্জন করবে।”
তিনি আরও জানান, পরীক্ষার ফল দ্রুত প্রকাশে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু, শিক্ষা প্রশাসনে ডিজিটাল রূপান্তর এবং অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের সংখ্যা ২,২৫৭টি, যেখানে ৩৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এই বিপুল সংখ্যক তরুণের অধিকাংশই মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, যারা পুরনো সিলেবাসের কারণে আধুনিক কর্মবাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। এ বাস্তবতায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে আইসিটি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দক্ষ কর্মশক্তিতে রূপান্তরিত করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ-র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফের চিফ অব এডুকেশন দীপা শংকর।
ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, “স্বাধীনতার পর শিক্ষায় পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না করায় দেশ এখনো পিছিয়ে। তবে বিলম্ব হলেও এখনই শিক্ষার গুণগত উন্নয়ন ও দক্ষতা বিকাশে জোর দেওয়ার সময়।”
তিনি আরও বলেন, “আইসিটি কোর্স প্রণয়নের উদ্যোগের পর এটুআই ও ইউনিসেফের সহায়তায় এ পর্যন্ত যে অগ্রগতি হয়েছে, তা অত্যন্ত ইতিবাচক। এই শিক্ষাক্রম চালু হলে শিক্ষার্থীরা কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হওয়ার মতো দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।”
তিন দিনব্যাপী এ কর্মশালায় কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে সরকারের এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রোগ্রাম এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ।
কর্মশালায় অনলাইন প্রশিক্ষণ ডিজাইন, স্ক্রিপ্ট রাইটিং, প্রশিক্ষণ কনটেন্ট যাচাই এবং চূড়ান্তকরণ বিষয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রফিক, পলিসি অ্যানালিস্ট আফজাল হোসেন সারওয়ার, হেড অফ প্রোগ্রাম আব্দুল্লাহ আল ফাহিম, ইউনিসেফের এডুকেশন স্পেশালিস্ট রফিকুল ইসলাম সুজন, এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাজমা তারা।
কর্মশালার সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণ দপ্তরের পরিচালক মোছাঃ সালমা পারভীন।
এতে অংশ নেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর আইসিটি শিক্ষক, শিক্ষক প্রশিক্ষক, অনলাইন কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট বিশেষজ্ঞ, ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রতিনিধি এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।