
কক্সবাজার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে নেয়া হয়েছে অভিনব উদ্যোগ ‘প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোর’।
উখিয়ার সমুদ্র পাড়ের ৫০০ প্রান্তিক পরিবার ফেলনা প্লাস্টিক জমা দিয়ে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করার সুযোগ পেয়েছেন এ উদ্যোগে। দেড় টন প্লাস্টিকের বিনিময়ে প্রায় ১ লাখ টাকার খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন প্রান্তিক মানুষ।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় ১৯ ধরনের নিত্যপণ্য দিয়ে সুপারশপ সাজিয়েছে বিদ্যানন্দ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা। সেখানে ১ কেজি প্লাস্টিক দিয়ে পাওয়া গেছে ৬ টি ডিম, ১ কেজি প্লাস্টিকে ১ কেজি চাল, ৫ কেজি প্লাস্টিকে ১ লিটার তেল, ২ কেজি প্লাস্টিকে ১ কেজি ডাল ইত্যাদি।
প্লাস্টিক দিয়ে বাজার করতে আসা উখিয়া উপকূলের সোনারপাড়ার বাসিন্দা মরিয়ম বেগম বলেন, মাইকিং শুনে ১ সপ্তাহ ধরে প্লাস্টিক কুড়িয়ে ১০ কেজি প্লাস্টিক জমিয়েছি।
এগুলো দিয়ে আজ প্রায় ৬০০-৭০০ টাকার বাজার করেছি। এগুলো ভাংগারির দোকানে নিয়ে গেলে ২০০ টাকার বেশি পেতাম না। এ রকম বাজার বার বার বসলে সৈকত থেকে প্লাস্টিক কুড়িয়ে জমিয়ে রাখব।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবক মোবারক বাবু বলেন, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা প্রতিবছরই পুরো কক্সবাজার ও সেন্টমার্টিনে ৬ মাস ব্যাপী এই কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। এই ৬ মাসে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে ১ লাখ কেজি সামুদ্রিক প্লাস্টিক সংগ্রহ করে শতভাগ রিসাইকেল করার পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছি।
তিনি জানান, গত ৩ আগস্ট সুগন্ধা সমুদ্র সৈকতে শুরু হওয়া সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ কর্মসূচিতে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে ২৩ হাজার ৫০০ কেজি প্লাস্টিক সংগ্রহ করে রিসাইকেল করা হয়েছে।
প্রকল্প ব্যবস্থাপক রানা আহমেদ বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহার ও সংগ্রহে মানুষের অভ্যাসগত পরিবর্তন ছাড়া প্লাস্টিক দূষণ রোধ করা সম্ভব না। তাই মানুষ ও পযটকদের মধ্যে অভ্যাসগত পরিবর্তন ও সচেতনতা তৈরিতে আমরা ইনোভেটিব সব আইডিয়া নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সংগৃহিত প্লাস্টিকের একটা অংশ দিয়ে সৈকতে ‘ভাস্কর্য’ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।
উল্লেখ্য, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন যৌথভাবে ২০২২ সাল থেকে প্রতিবছর ধারাবাহিকভাবে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছে।