
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): মালদ্বীপে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের অধিকার সুরক্ষা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে জাতিসংঘ।
মালদ্বীপে জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর (ইউএনআরসি) হাও ঝাং এবং বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মো. নাজমুল ইসলামের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই আশ্বাস দেওয়া হয়।
আজ মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাইকমিশনের চ্যান্সারি ভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দুই পক্ষই মালদ্বীপে অবস্থানরত বিশাল বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর কল্যাণ, স্বাস্থ্যসেবা এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আলোচনা করেন।
বৈঠকে কূটনৈতিক সম্পর্কের বাইরেও মানবিক ও উন্নয়নমূলক বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সাক্ষাৎকালে হাও ঝাং বলেন, মালদ্বীপে বিদেশি শ্রমশক্তির বৃহত্তম অংশই বাংলাদেশি। তাই তাদের কল্যাণ, নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিত করা জাতিসংঘের কার্যক্রমে অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হবে।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মো. নাজমুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশি কর্মীরা মালদ্বীপের ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারছে। ফলে তারা মালদ্বীপের অর্থনীতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করছেন।
আলোচনায় মালদ্বীপের মেডিসিন গ্র্যাজুয়েটদের বাংলাদেশে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ-সুবিধার বিষয়টিও তুলে ধরেন হাইকমিশনার ড. নাজমুল। এছাড়া জনস্বাস্থ্য ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ যে মালদ্বীপের বিশ্বস্ত সহযোগী, তা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
বৈঠকে ভবিষ্যতে কাজের পরিধি আরও বিস্তৃত করতে একটি ‘ত্রিপক্ষীয় কাঠামো’ গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন হাইকমিশনার। এছাড়া বাংলাদেশ হাইকমিশন, মালদ্বীপ সরকার এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে শ্রম অধিকার ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ে যৌথ সেমিনার আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
ইউএনআরসি এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানান এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)-কে অভিবাসী শ্রমিকদের সুরক্ষায় আরও কার্যকর ও উন্নত প্রস্তাবনা তৈরির অনুরোধ করবেন বলে আশ্বাস দেন। এর বাইরে নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করতে আইওএম বাংলাদেশ ও আইওএম মালদ্বীপের মধ্যে আন্তঃসহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে উভয় পক্ষই আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এই সমন্বিত উদ্যোগ কেবল অভিবাসী শ্রমিকদের ভাগ্যন্নয়নই করবে না, বরং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে শান্তি, মানবিক সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।