
সুনামগঞ্জ, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশের অন্যতম দ্বিতীয় বৃহৎ জলাভূমি সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জলাভুমি ও জীববৈচিত্র্য উন্নয়নে ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এই হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বাস্তবায়ন করবে পরিবেশ অধিদপ্তর। আর ২০২৯ সাল পর্যন্ত মেয়াদের এ প্রকল্পটির অর্থায়ন করেছে ইউএনডিপি।
প্রকল্পের আওতায় গড়ে তোলা হবে ৮০০ হেক্টর পাখির আবাসস্থল, ৪০০ হেক্টর জলাভূমি ও ৩০০ হেক্টর নলখাগড়া সৃজন এবং ২০ হেক্টর বিল পুনরুদ্ধার। এছাড়াও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে হাওর রক্ষায় স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করা হবে। জলাভূমি উন্নয়নের সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে নিয়োগ করা হবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
কমিউনিটি বেজড ম্যানেজমেন্ট অফ টাঙ্গুয়ার হাওর ওয়েটল্যান্ড ইকোসিস্টেম প্রকল্পের আওতায় হাওরপাড়ের জনগোষ্টির মাঝে হাওরের জলাভূমি রক্ষায় এ প্রকল্প কর্মশালার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে বলে জানান, প্রকল্প পরিচালক শাহেদা বেগম।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জানান, টাঙ্গুয়ার হাওরকে রক্ষায় শুধু সরকারের দায়িত্ব রয়েছে, এমনটা চিন্তা করলে কোনোদিনই হাওর রক্ষা সম্ভব না। যত দিন যাচ্ছে ততই হাওরের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, সম্পদ নি:শেষ হচ্ছে। হাওরকে ঘিরে যাদের জীবন জীবিকা নির্ভর করছে, তারা সচেতন ও সক্রিয় না থাকলে হাওরের আরো ক্ষতি হবে। তবে হাওর পাড়ের জেলে ও কৃষকদের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ থাকতে হবে।
এদিকে, টাঙ্গুয়ার হাওর সুরক্ষা আদেশে জেলার দুই উপজেলার ৪টি ইউনিয়নকে আওতাভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো- মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ও বংশীকুন্ডা দক্ষিণ এবং তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর (দক্ষিণ) ও শ্রীপুর (উত্তর)। যা টাঙ্গুগুয়ার হাওর, মোয়াজ্জেমপুর, কিসমত মেন্দাতা, জগদীশপুর, লামাগাঁও ও রাঙ্গাছড়া পূর্ব মৌজার অন্তর্গত।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পানি সম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার মহাপরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে কমিটির দায়িত্ব, কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ, টাঙ্গুয়ার ও হাকালুকি হাওর জন্য প্রতিপালনীয় নির্দেশনা এবং স্বল্প (২ বছর), মধ্য (৫ বছর) ও দীর্ঘ (১০ বছর) মেয়াদি পরিকল্পনা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রজ্ঞাপনে জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে হাওর সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে।
কমিটির অন্যান্যরা হলেন- সদস্য সচিব বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (মহাপরিচালক কর্তৃক মনোনীত), সদস্য জেলা পুলিশ সুপার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক, জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত স্থানীয় পরিবেশবাদী/হাওর সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংগঠন/ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি (১ জন)। এভাবেই হাওরকে রক্ষায় সরকারি ও বেসরকারিভাবে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান সচেতন মহল।