
ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্ক জোরদারে ইউরোপীয় ও আফ্রিকান নেতারা সোমবার অ্যাঙ্গোলায় এক শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হচ্ছেন। এতে ইউক্রেন সম্পর্কিত জরুরি আলোচনাও এজেন্ডায় রয়েছে।
লুয়ান্ডা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস এবং কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আফ্রিকার বহু নেতা লুয়ান্ডায় উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আফ্রিকান দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার মূল বিষয় হবে বাণিজ্য, অভিবাসন এবং গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল সংক্রান্ত। তবে ইইউ নেতারা প্রাথমিকভাবে মনোযোগ দেবেন ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত খসড়া পরিকল্পনা সংশোধনের প্রচেষ্টায়। এটি প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার কঠোর দাবির পক্ষে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
রোববার জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের শীর্ষ প্রতিনিধিরা মার্কিন প্রস্তাবের নতুন সংস্করণ নিয়ে আলোচনা করেন। সোমবার লুয়ান্ডায় শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ইইউ নেতারা একটি ‘বিশেষ বৈঠক’ করবেন বলে ইইউ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব রোববার জোহানেসবার্গে এএফপিকে বলেন, ২৮ দফা পরিকল্পনায় এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে।
দুই দিনের অ্যাঙ্গোলা শীর্ষ সম্মেলনটি সপ্তম ইইউ-আফ্রিকান ইউনিয়ন বৈঠকটি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনের পর হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জি২০ সম্মেলন বর্জন ভূরাজনৈতিক বিভাজনকে আরও স্পষ্ট করেছে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েন ও ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, আজ আমরা জলবায়ু পরিবর্তন, ডিজিটাল রূপান্তর, অবৈধ অভিবাসন, সংঘাত ও নিরাপত্তাহীনতাসহ যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি, এগুলোর কোনো সীমা নেই। এর প্রতিক্রিয়া হতে হবে বহুমুখী সহযোগিতা।
তারা আরও বলেন, আফ্রিকা ও ইউরোপ একসঙ্গে পথ দেখাতে পারে। দুই ব্লক যৌথ মূল্যবোধ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে একটি ‘ন্যায্য, সবুজ এবং আরও নিরাপদ বিশ্ব গড়ে তুলতে চায়।
আফ্রিকা তার গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও জ্বালানি সম্ভাবনার কারণে একটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। সেখানে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে চাইছে।
ইইউ মহাদেশটির সবচেয়ে বড় প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ সরবরাহকারী এবং প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার। ব্রাসেলসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পণ্য ও সেবার ৪৬৭ বিলিয়ন ইউরো (৫৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বাণিজ্যিক লেনদেন হয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউরোপকে আফ্রিকায় অবকাঠামো, জ্বালানি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী শিল্প প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে হবে।
আফ্রিকান ইউনিয়নের মুখপাত্র নূর মোহাম্মদ শেখ বলেন, আফ্রিকা নতুন ঘোষণাপত্র খুঁজছে না, বরং বিশ্বাসযোগ্য, বাস্তবায়নযোগ্য প্রতিশ্রুতি চাইছে।