
ঢাকা, ২৪ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি কর্মসূচির মাধ্যমে বেসামরিক বিমান চলাচলে অংশীদারিত্ব আরও গভীর করেছে। এতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রক তদারকি বিষয়ে সহযোগিতা জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। কর্মসূচিটি ইইউ-দক্ষিণ এশিয়া বিমান চলাচল অংশীদারিত্বের (ইইউ-এসএএপিপি) একটি প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে।
ইইউ-অর্থায়িত এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিমান চলাচল নিরাপত্তা সংস্থা (ইএএসএ)। এরই অংশ হিসেবে তিন দিনব্যাপী আঞ্চলিক বিমান নিরাপত্তা কর্মসূচি এবং আইকাও’র ইউনিভার্সাল সেফটি ওভারসাইট অডিট প্রোগ্রাম (ইউএসওএপি) বিষয়ক বিশেষায়িত কর্মশালা আয়োজন করা হয়। এতে ইউরোপ ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
প্রথম কর্মসূচিতে সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এসএমএস) এবং ফ্লাইট ডেটা মনিটরিং (এফডিএম)-এর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়, যা বর্তমানে বৈশ্বিক বিমান নিরাপত্তার মূল স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, এয়ারলাইনস ও শিল্প সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করে।
ইউরোপীয় বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এটিআর-এর কারিগরি বিশেষজ্ঞরা কার্যক্রম বিষয়ক অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন, আর দক্ষিণ এশিয়ার অপারেটররা তথ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার, নিরাপত্তা সংস্কৃতি ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশের জন্য এ কর্মসূচি ছিল অগ্রগতি তুলে ধরার এবং একই ধরনের পরিবেশে পরিচালনাকারী আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ।
দ্বিতীয় কর্মসূচি- ইউএসওএপি অডিট সাপোর্ট কর্মশালা-বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), ইইউএসএ বিশেষজ্ঞ এবং প্রতিবেশী দেশের নিয়ন্ত্রকদের একত্রিত করে। এতে অডিট প্রস্তুতি, নথি মানদণ্ড, প্রমাণ ব্যবস্থাপনা এবং আইকাও প্রোটোকল অনুযায়ী তদারকি কৌশল পর্যালোচনা করা হয়।
অংশগ্রহণকারীরা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা তদারকি মানদণ্ডে ধারাবাহিকভাবে শর্তসমূহ বজায় রাখার অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন, যা ভবিষ্যৎ আইকাও মূল্যায়নের আগে আঞ্চলিক প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের প্রধান মাইকেল মিলার এবং বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, বেসামরিক বিমান চলাচলে ইইউ-বাংলাদেশ সহযোগিতা আরও বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি এবং বহর নবায়ন, পরিবেশবান্ধব বিমান চলাচল, উদ্ভাবন ও নিরাপত্তায় ইইউ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। ইইউ মনে করে, বাংলাদেশের বিমান খাত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি।
কর্মসূচিতে কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন, এ দুটি আয়োজন বাংলাদেশ ও ইইউ’র মধ্যে ক্রমবর্ধমান কারিগরি অংশীদারিত্ব প্রয়োগ করেছে, ফলে ধারাবাহিক সংলাপ, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যৌথ নিরাপত্তা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গড়ে উঠছে।
ইইউ-দক্ষিণ এশিয়া বিমান চলাচল অংশীদারিত্বের একটি প্রকল্প, যা ইইউ-অর্থায়িত ইউ-এএসআইএ এপিপি-এর একটি অংশ এবং বাস্তবায়ন করছে ইএএসএ। প্রকল্পটি ইউরোপ ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা জোরদারে কারিগরি কর্মশালা, প্রশিক্ষণ ও বিশেষজ্ঞ বিনিময়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা তদারকি, শক্তিশালী করা এবং বৈশ্বিক বিমান মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য আনতে কাজ করছে।