চট্টগ্রামে বড় ভাইকে কুপিয়ে হত্যা ‘ইয়াবা আসক্ত’ ছোট ভাই ও তার স্ত্রীর 

বাসস
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১৯:১০
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম, ২২ মে, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় ‘ইয়াবা আসক্ত’ ছোট ভাই ও তার স্ত্রী এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রবাস ফেরত আপন বড়ভাই মো. সাহেদকে (৩৫)। খুনের পর লাশ নিয়ে পালানোর সময় খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের ছোটভাই মো. জাহেদ (২৭) ও তার স্ত্রী তাসমিন বিনতে আসলাম ওহিকে (২৬) গ্রেফতার ও লাশ উদ্ধার করেছে।

নিহত মো. সাহেদ চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের হাজী মীর হোসেন সওদাগর বাড়ির মৃত জালাল আহমেদের ছেলে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফতাব উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার (২১ মে) গভীর রাতে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের দুই নম্বর সড়কের এক বাসায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, ছোট ভাই ও তার স্ত্রী দু’জনই ইয়াবা আসক্ত। ইয়াবা সেবনসহ পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়ার জেরে ঘুমন্ত বড় ভাইকে তারা খুন করেছে।

পুলিশ জানায়, সাহেদ ও জাহেদ দু’জনই দুবাই প্রবাসী ছিলেন। বছরখানেকের ব্যবধানে দু’জনই দেশে ফিরে এসে বেকার অবস্থায় ছিলেন। তাদের বাবা মারা গেছেন। তাদের আরেক ভাই মা ও তার পরিবার নিয়ে দুবাইয়ে থাকেন। চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় একই বাসায় সাহেদ, জাহেদ ও তার স্ত্রী থাকতেন। কয়েকমাস আগে সাহেদের সঙ্গে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়েছে।

সাহেদকে কুপিয়ে হত্যা করার পর বুধবার রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে একজন অ্যাম্বুলেন্স চালকের কল পেয়ে চান্দগাঁও থানা পুলিশের একটি টিম অভিযানে নামে। নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথার কাছাকাছি এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। তল্লাশি চালিয়ে সেখানে সাহেদের রক্তাক্ত লাশ এবং জাহেদ ও তার স্ত্রী তাসমিনকে পাওয়া যায়।

প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘জাহেদ ও তাসমিন রাতভর ইয়াবা সেবন করে। সারাদিন ঘুমায়। ইয়াবা আসক্তি নিয়ে ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সঙ্গে সাহেদের মনোমালিন্য চলছিল। বুধবার সন্ধ্যার পর বাসায় তারা তিনজন ঝগড়া করে। জাহেদ ও তার স্ত্রী মিলে বাসার আসবাবপত্রও ভাঙচুর করে। ঝগড়া শেষে সাহেদ নিজ কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে ওই কক্ষে ঢুকে জাহেদ ও তার স্ত্রী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় সাহেদকে চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে।’

তিনি বলেন, ‘এর পর জাহেদ গিয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশা ডেকে আনে। অটোরিকশায় লাশ তুলে প্রথমে আবাসিক এলাকা থেকে বের করে নেয়। এরপর একটি অ্যাম্বুলেন্স পেয়ে সেখানে লাশ তুলে নেয়। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তারা গ্রামের বাড়ি রাউজানের নোয়াপাড়ার দিকে রওনা দেয়। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অ্যাম্বুলেন্স চালক কৌশলে বিষয়টি থানায় অবহিত করে। এরপর আমরা চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার এগিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকাতে সক্ষম হয়।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাহেদ ও তাসমিন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এ বর্ণনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওসি। তিনি আরও জানান, সাহেদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার দু’জনকে থানায় রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ইভটিজিং ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে শিক্ষার্থী-পুলিশ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান: রিলিক সিটির ২২ সাইনবোর্ড জব্দ, ১০ লাখ টাকা জরিমানা
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সেনানিবাসে আশ্রয় গ্রহণকারীদের প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর অবস্থান
বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে জেদ্দা চেম্বার প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত
নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করছে সরকার : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
রংপুরে হত্যাচেষ্টা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেফতার
পররাষ্ট্র সচিবের দায়িত্বে রুহুল আলম সিদ্দিকী
মানবতাবিরোধী অপরাধ: গ্রেফতার করতে পারবেন তদন্তকারী কর্মকর্তা- প্রসিকিউটর
বিদ্যুতের স্মার্ট প্রিপেইড মিটার ক্রয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের অভিযান
দেশীয় পশু দিয়েই বরিশালের কোরবানির পশুর চাহিদা মেটানো সম্ভব
১০