বাসস
  ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৩
আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২৬

যুদ্ধবিরতির পর প্রথম ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে : জাতিসংঘ

ফাইল ছবি

ঢাকা, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : দীর্ঘ প্রতীক্ষিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর রোববার ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা বহনকারী প্রথম ট্রাকগুলো প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

মিশরের রাফাহ থেকে এএফপি জানায়, ফিলিস্তিনি অঞ্চলে জাতিসংঘের অস্থায়ী ওসিএইচএ সহায়তা সংস্থার প্রধান জোনাথন হুইটল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে বলেছেন, 'যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক মিনিট পরই সরবরাহের প্রথম ট্রাকগুলো প্রবেশ শুরু করে।'

গত কয়েক দিন ধরে যাতে মানবিক সংস্থাগুলো গাজায় সাহায্যের দ্রুত বিতরণের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে সেজন্য একটি বিশাল প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।

মিশরের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, '২৬০টি সহায়তা ট্রাক এবং ১৬টি জ্বালানি বহনকারী ট্রাক' ইসরাইল-নিয়ন্ত্রিত কেরেম শালোম ক্রসিং এবং মিশর ও ইসরাইলের মধ্যে নিৎসানা ক্রসিং হয়ে গাজায় প্রবেশ করেছে।

কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই চুক্তির মধ্যস্থতাকারী

মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি শনিবার জানান, এই চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন গাজায়,৬০০ ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৫০টি জ্বালানিবাহী ট্রাক থাকবে।

রোববার এএফপি সাংবাদিকরা রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং এবং রাফাহ থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) পশ্চিমে অবস্থিত আল-আরিশ অঞ্চলে শত শত সাহায্যবাহী ট্রাক দেখেছেন।

এই যানবাহনগুলো মিশরের রাফাহ ও নিৎসানা হয়ে ইসরাইলের ক্রসিংগুলোতে গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেতে স্ক্রিনিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল।

কিছু ট্রাক মাল খালাসের পর খালি ফিরে গেছে, এবং প্রায় এক ডজন অ্যাম্বুলেন্সকেও রাফাহর প্রধান গেট থেকে বের হতে দেখা গেছে।

ইসরাইলি বাহিনী দখল করে নেওয়ার পর আগেকার সহায়তার গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ রাফাহ ক্রসিং মে মাস থেকে বন্ধ ছিল।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্টের মুখপাত্র নেবাল ফারসাখ 'ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ সহায়তা গ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে' উল্লেখ করে রোববার এএফপিকে বলেছেন, 'এই ট্রাকগুলো কোন প্রক্রিয়ায় গ্রহণ করা হবে এবং কোন ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।'

মানবিক সহায়তাকারীরা সাবধান করেছেন যে সাহায্য কার্যক্রম বিশাল বাধার সম্মুখীন হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে যেসব অবকাঠামো আগে চালান প্রক্রিয়াকরণের কাজ করত, তা ধ্বংস হয়ে যাওয়া।

২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর শুরু হয়ে ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলার পর রোববারের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। ৭ অক্টোবরের হামলা ছিল ইসরাইলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা।

তিন আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে মাসব্যাপী আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেকের আগের দিন এই চুক্তি কার্যকর হয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্যমতে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের প্রায় ৬৯ শতাংশ ভবন ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গাজায় বসবাসকারী ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় সবাই অন্তত একবার হলেও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

রোববারের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর অনেকেই তাদের বাড়ির এলাকায় ফিরতে শুরু করেছেন, যেখানে চারপাশে ধ্বংসস্তূপ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ভয়াবহ দৃশ্য দেখা গেছে।