কৃষিজমি আমাদের জীবিকা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির প্রাণ: ভূমি উপদেষ্টা

বাসস
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৪৪
ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। ফাইল ছবি

ঢাকা, ৭ অক্টোবর ২০২৫ (বাসস) : ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে কৃষিজমি শুধু উৎপাদনের ক্ষেত্র নয়, এটি আমাদের জীবিকা, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির প্রাণ। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অনিয়ন্ত্রিত নগরায়ন, শিল্পায়ন ও অবকাঠামো সম্প্রসারণের ফলে কৃষিজমি ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। ফলে আজ কৃষিজমি সুরক্ষা একটি জাতীয় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

আজ মঙ্গলবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ভূমি ব্যবহার ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বিষয়ক খসড়া পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা এ সময় আরও বলেন, দেশীয় খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও গ্রামীণ স্থিতিশীলতা সরাসরি কৃষিজমির ওপর নির্ভরশীল। কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে ভূমি জোনিং একটি কার্যকর নীতিগত হাতিয়ার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষিজমি হ্রাস এবং অবৈধ বা অনুপযুক্ত ব্যবহারের সমস্যার সমাধানে ভূমি মন্ত্রণালয় ‘ভূমি ব্যবহার ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ শীর্ষক খসড়া প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এই অধ্যাদেশের লক্ষ্য হলো পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, কৃষিজমি সংরক্ষণ, পরিকল্পিত ভূমি জোনিং এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

ভূমি উপদেষ্টা বলেন, ভূমি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ শুধু প্রশাসনিক দায়িত্ব নয়, এটি জাতীয় টেকসই উন্নয়নের অপরিহার্য শর্ত। সঠিক নীতি, সচেতনতা ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে একটি পরিবেশবান্ধব ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব। এই অধ্যাদেশে ভূমি জোনিং-এর ১৪টি শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে।

খসড়ায় উল্লেখ রয়েছে, ভূমি, বনভূমি ও অন্যান্য বিশেষ শ্রেণির ভূমির সুরক্ষার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০ (১৯৫১ সনের ২৮ নং আইন)-এর ৮৩ ধারায় যাহাই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীনে সংজ্ঞায়িত সকল কৃষি ভূমি সুরক্ষা করতে হবে। কৃষিজমি ব্যতীত অন্যান্য জমিও এই আইনের বিধান অনুযায়ী সুরক্ষা করতে হবে। অনুমতি ব্যতীত কৃষি ভূমি ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না, শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না, কিংবা এমনভাবে ব্যবহার করা যাবে না যাতে কৃষি ভূমির শ্রেণি পরিবর্তিত হয়ে যায়।

এছাড়া, এ অধ্যাদেশে অপরাধ সংঘটনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলে ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। দ্রুতই এই অধ্যাদেশ কার্যকর করার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), গৃহায়ন ও গণপূর্ত এবং শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

এছাড়া সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ.এস.এম সালেহ আহমেদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
অক্সিজেন সামিটে সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনা তৈরি ও শক্তিশালী সুশাসনের আহ্বান
নির্বাচনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল
বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সূচিতে পরিবর্তন
মেধাভিত্তিক সরকার গঠনে শিক্ষকদের সমর্থন ও সহযোগিতা চায় বিএনপি : তারেক রহমান 
বাংলাদেশ ও মিশরের সর্বোচ্চ আদালতের সহযোগিতা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত
মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট দিয়ে করা যাবে হজযাত্রী নিবন্ধন 
জাতীয় এ্যামেচার র‌্যাংকিং টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন সোনিয়া ও আবু বকর সিদ্দিক
পিরোজপুরে তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে সমাবেশ
প্রবীণদের জন্য কমিউনিটিভিত্তিক কেয়ার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা
ম্যাক্রোঁকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন তার প্রথম প্রধানমন্ত্রী
১০