পল্টন ট্রাজেডি উপলক্ষে ছাত্রশিবিরের আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী

বাসস
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০০:৩৬ আপডেট: : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০০:৫৭
ছবি : বাসস

ঢাকা, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে ২৮ অক্টোবর পল্টন ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব সভাপতি আসিফ আব্দুল্লাহ ও দক্ষিণ সভাপতি হেলাল উদ্দিনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। প্রধান বক্তা ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, “২৮ অক্টোবর আমাদের জন্য যেমন বেদনার, তেমনি প্রেরণারও। সেদিন ছিল চারদলীয় জোট সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তরের দিন। সেদিন জামায়াতে ইসলামী আনুষ্ঠানিক সমাবেশ শেষে বঙ্গভবনে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। 

সেই সময় শেখ হাসিনা তার দলের শীর্ষস্থানীয় সন্ত্রাসীদের লগি-বৈঠা নিয়ে ঢাকায় আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সকাল থেকেই তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা পরিচালনা করে এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সকালেই ছয়জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে।

তিনি আরও বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে শেখ হাসিনাকে ১ নম্বর আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির ইশারায় সেই মামলার অধিকতর তদন্তের কথা বলে সময়ক্ষেপণ করা হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়।’

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান—এই মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে শেখ হাসিনা-সহ ১৪-দলের সংশ্লিষ্ট খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে এ দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম হতে দেব না। ২৮ অক্টোবরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমেই হাসিনা ১/১১-এর কালো অধ্যায় তৈরি করেছিলেন এবং সেই অধ্যায়ের মাধ্যমেই বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী কার্যক্রমের সূচনা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠার পর মাত্র চার বছর অতিক্রান্ত হওয়ার মধ্যেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের চারজন ভাইকে হত্যা করা হয়। একটি ইটের ওপর মাথা রেখে আরেকটি ইট দিয়ে মাথা থেতলে দেয়া হয়েছিল। আমাদের অসংখ্য ভাইকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে। এখনও অনেক পরিবার তাদের প্রিয়জনের লাশ পায়নি। হত্যার পর ভাইদের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছিল। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট পর্যন্ত অতিক্রম করেছে।’ 

সরকারের প্রতি দুটি দাবি জানিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘২৮ অক্টোবরের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের বীজ বোনা হয়েছিল। তাই এ হত্যাকাণ্ডের মামলাটি ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে পুনরায় চালু করে দ্রুত বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে, যাতে খুনিরা সর্বোচ্চ শাস্তি পায়। পাশাপাশি ২৮ অক্টোবর সারাদেশে নিহত ১৮ জন ভাইকে রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদের স্বীকৃতি প্রদান এবং তাদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানাই।’

প্রদর্শনীতে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম বুলবুল, ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম, কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট সদস্যবৃন্দ, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি, জাকসুর জিএস মাজহারুল ইসলাম, শহীদ শিপনের পিতা তাজুল ইসলাম, অন্যান্য শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান শেষে নেতৃবৃন্দ প্রদর্শনীর বিভিন্ন আয়োজন ঘুরে দেখেন এবং দর্শনার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
পল্টন ট্রাজেডি উপলক্ষে ছাত্রশিবিরের আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী
দুদকের অভিযান : স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ভূমি খাতে অনিয়ম উদঘাটন
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে পাকিস্তান সফরে ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী
চট্টগ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবদল কর্মী নিহত
রাজধানীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ডামি পিস্তলসহ ৯ জন গ্রেফতার
রাবির সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন
খুলনায় দুর্ঘটনা রোধ ও যানজট কমাতে সচেতনতামূলক র‌্যালি
এআই ব্যবহারে গতি আনতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপদানে ৮০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের
বিদ্যুৎ আমদানির অর্থ পরিশোধে নিয়ম শিথিল করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ড্যাবের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন
১০