
খুলনা, ৫ নভেম্বর, (২০২৫): আসন্ন জলবায়ু সম্মেলন কপ-৩০কে সামনে রেখে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি’র (ইউএনডিপি) শুভেচ্ছা দূত জয়া আহসান এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার মঙ্গলবার খুলনার দাকোপ পরিদর্শন করেছেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ সফরের উদ্দেশ্য ছিল জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তব প্রভাব প্রত্যক্ষ করা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠী কীভাবে অভিযোজনমূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে নিজেদের জীবনযাত্রা গড়ে তুলছে তা জানা।
বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর বাস্তবতা অনুধাবন করা এবং ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে কার্যকর পদক্ষেপ জোরদার করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানানোই এই সফরের মূল বার্তা।
সফরকালে তারা বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ, সুইডেন ও ডেনমার্কের সহায়তায় বাস্তবায়িত ইউএনডিপি ও ইউএনসিডিএফ-এর লজিক প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা মানুষের, বিশেষ করে নারীদের অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে এটি টেকসই জলবায়ু সহনশীল উন্নয়নে প্রকল্পটি অবদান রাখছে।
এসময় ইউএনডিপি প্রতিনিধি দল খুলনার তিলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিদর্শন করে স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলেন এবং কীভাবে নারীরা জলবায়ু অভিযোজনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং পানির সংকট মোকাবেলা থেকে শুরু করে বিকল্প জীবিকার সুযোগ তৈরি করছেন, তা প্রত্যক্ষ করেন।
সফর শেষে জয়া আহসান বলেন, দাকোপে এসে আমি প্রত্যক্ষ করেছি, জলবায়ু পরিবর্তন এখানে কেবল একটি সংবাদ নয়, এটি মানুষের প্রতিদিনের বাস্তবতা। তবে নিরাপদ পানির অভাব, লবণাক্ততা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো চ্যালেঞ্জের মাঝেও মানুষ নিজেদের নতুনভাবে গড়ে তুলছে এটাই আসল অনুপ্রেরণা। ইউএনডিপি ও বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় এই মানুষগুলো যেভাবে বারবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তা আমার কাছে এক অসাধারণ মানবিক গল্প।’
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, ‘দাকোপে এসে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রকৃত মুখোমুখি হওয়া এক গভীর অভিজ্ঞতা। এটি ভবিষ্যতের আশঙ্কা নয়, বরং আজকের বাস্তব সংগ্রাম। তবে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো এখানকার নারীদের দৃঢ়তা ও নেতৃত্ব।
তিনি বলেন, লজিক প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে কাজ করে এই চ্যালেঞ্জগুলোকে সুযোগে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করছি। আসন্ন কপ-৩০ সম্মেলনে বাংলাদেশের এই উদ্ভাবন ও অভিযোজনের গল্প বিশ্বকে শুনতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে এই সফর একটি টেকসই, ন্যায়সঙ্গত ও জলবায়ু সহনশীল পৃথিবীর জন্য একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানায়।