কুয়াশায় ঢাকা উত্তর জনপদে শীতের আগমন

বাসস
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৪৫
ছবি : বাসস

রেজাউল করিম মানিক

রংপুর, ৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত উত্তর জনপদের ৮ জেলায় প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীত আসছে। ইতোমধ্যে শীতের আমেজ আসতে শুরু করেছে এ অঞ্চলে। সন্ধ্যার পর থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে এই অঞ্চলের গ্রামীণ জনপদ।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ বছর ভারী শীতের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে বাতাসের আর্দ্রতা নিচে নেমে এসেছে। 

তীব্র শীতের আগেই অসহায় ছিন্নমূল মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা প্রয়োজন। 

রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল জানিয়েছেন, শীত মোকাবেলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। উত্তরের ৮ জেলার তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র নদীর ৭৪৫টি চরে যারা বাস করেন তাদের জন্য শীত নেমে আসার আগেই শীত বস্ত্র বিতরণ করা জরুরি। যাতে শীত নিবারণের আগুনে দগ্ধ হয়ে কোন ব্যক্তি প্রাণ না হারায়।

এ বছর নিম্নচাপের প্রভাবে কয়েকদিন বৃষ্টিপাতের পরই উত্তরবঙ্গের ৮ জেলায় পাওয়া যাচ্ছে শীতের আভাস। কার্তিক মাসেই দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে ক্রমেই যেন স্পষ্ট হয়ে উঠছে শীতের আগমন।

গত কয়েকদিন ধরে ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে রংপুর সহ আশেপাশের জেলার গ্রামীণ জনপদগুলো। ভোরের হালকা শীত আর ঠান্ডা হাওয়া মনে করিয়ে দিচ্ছে—শীত আসতে দেরি নেই।

কুয়াশায় মোড়ানো পথঘাট, মাঠে সোনালি ধানের আভা, আর বিলে শাপলার হাসি—সব মিলিয়ে যেন এক স্বপ্নিল ছবি আঁকছে প্রকৃতি। উঠানজুড়ে ছড়িয়ে থাকা শিউলি আর বেলী ফুলের সুবাস আরও নির্মলতা, আরও পবিত্রতা ছড়িয়ে দিচ্ছে গ্রামীণ পরিবেশে।

রংপুর আবহাওয়া আবহাওয়া অফিস জানায়, বুধবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৩ শতাংশ।

শীতের আগমনের কথা জানিয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর এলাকার অটোরিকশাচালক হরিদাস রায় বলেন, সকালে অটো নিয়ে বের হয়েছি, কিন্তু ঘন কুয়াশায় রাস্তা দেখা যাচ্ছিল না। হেডলাইট জ্বালিয়ে খুব সাবধানে সেই সময় গাড়ি চালাতে হয়েছে।

এরই মধ্যে এ অঞ্চলের গ্রামীণ জনপদে শীতের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ঘরে ঘরে বিছানার ওপর জায়গা পেতে শুরু করেছে পাতলা কাঁথা, চাদর ও কম্বল। দিনের বেলা রোদের ঔজ্জ্বল্য থাকলেও রাত নামলেই শীতের আমেজ বাড়ছে। বিশেষ করে মধ্যরাতের পর হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে।

রংপুর নগরীর হনুমানতলা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ফারিহা বলেন, ‘ভোরে ঘুম ভাঙতেই জানালার ওপারে দেখি ধোঁয়াটে কুয়াশা। মনে হচ্ছিল যেন পুরো শহর ঘুমিয়ে আছে কুয়াশার চাদরে। কেউ ফজরের নামাজ শেষে হাঁটতে বের হচ্ছেন, কেউ আবার চায়ের দোকানে বসে গরম চায়ের কাপে গল্পে মেতে উঠেছেন। শীতের সময় এ এক অন্য রকম আনন্দ।’

রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে ঠান্ডা একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে। ভোরে কুয়াশা আর হালকা ঠান্ডা শীত মৌসুম পরিবর্তনের সংকেত। আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে।’

উত্তরের প্রকৃতিতে এখন হেমন্তের ছোঁয়া স্পষ্ট। ধান পাকার সুবাস, শাপলা-শিউলির সৌন্দর্য আর ভোরের কুয়াশা—সব মিলিয়ে এক অনিন্দ্য দৃশ্য আঁকছে উত্তরের এই জেলাগুলো। গ্রামীণ মানুষেরা তাই বেশ বুঝতে পারছেন— শীত আসছে। প্রকৃতি যেন ডাক দিচ্ছে শীতের হিমেল হওয়া উপভোগের জন্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
চট্টগ্রামে নির্বাচনী প্রচারণায় সন্ত্রাসী হামলায় বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধ, ১ জন নিহত 
চট্টগ্রাম-৫ আসনে বিএনপি প্রার্থী ব্যারিস্টার মীর হেলালের প্রচারণা শুরু
বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে দ্বিতীয় ড্রোন কারখানা স্থাপনে চুক্তি
বসনিয়ার নার্সিংহোমে আগুনে নিহত ১১, আহত ৩০
লেবাননের দক্ষিণে ইসরাইলি হামলায় একজন নিহত
ইইউ প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় যোগদানের আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করলেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সিইসির কাছে নেত্রীদের দাবি: নারীরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারেন
মেট্রোরেলের কামালাপুর অংশের নির্মাণ অগ্রগতি ৬৫.৬৮ শতাংশে পৌঁছেছে
ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত ১০০ ছাড়িয়েছে
ইউরোপীয় সামরিক জোটে অংশীদারের মর্যাদা পেল ইউক্রেন
১০