খাগড়াছড়ির অনামিকা এখন তরুণ উদ্যোক্তাদের আইকন

বাসস
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:৩১
নিজের প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন বিউটিশিয়ান অনামিকা বড়ুয়া। ছবি: বাসস

// জীতেন বড়ুয়া //

খাগড়াছড়ি, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): খাগড়াছড়িতে  কর্মসংস্থান সৃজন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির এক গৌরবময় উদাহরণের নাম অনামিকা বড়ুয়া (২৩)। একজন তরুণ সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি এখন জেলার যুব নারীদের কাছে আইকন হয়ে উঠেছেন। খাগড়াছড়ি জেলায় অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী হিসেবেও ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন বিউটিশিয়ান অনামিকা বড়ুয়া।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের কল্যাণপুর গ্রাম নিবাসী সম্পদ বডুয়া ও বিউটি বডুয়া দম্পতির এক মাত্র সন্তান অনামিকা। সৎ, নির্ভীক, উদ্যমী ও আত্মপ্রত্যয়ী এই যুব নারী অনামিকা এখন জেলার এক সাফল্যের নাম।

বাসসের সাথে আলাপকালে বিউটিশিয়ান অনামিকা বড়ুয়া বলেন, জাতীয় মহিলা সংস্থার খাগড়াছড়ি শাখা থেকে ‘অথর্নৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন’ প্রকল্পের অধীনে ২০১৮ সালে  প্রথম বিউটিফিকেশন কোর্স সম্পন্ন করি। পরে বুটিক্স-এর ওপরও একটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এরপর এই প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্প মেয়াদে ৫০ হাজার ঋণ নিয়ে অনামিকা বিউটি পার্লার নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলি।

তিনি বলেন, শুরুতে বহুবিধ বাধার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে আজ আমি অনেকটা সফল। বর্তমানে অনামিকা বিউটি শপ ও অনামিকা টেইলারিং শপ নামে দু’টি প্রতিষ্ঠান  রয়েছে। পাশাপাশি একটি বুটিক্স হাউজ প্রকল্প পরিচালনা করছি। এছাড়া ফ্যাশন ডিজাইনের ওপরও কাজ করছি। এ সব কাজের পাশাপাশি আমি খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে বিবিএ পড়ছি।

২০১৮ সাথে জাতীয় মহিলা সংস্থা থেকে মাত্র ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলেন অনামিকা। তার ঐকান্তিক চেষ্টা, মেধা ও আত্মপ্রত্যয়ে ফলে মাত্র কয়েক বছর্ইে এই প্রকল্পের মূলধন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। তিনি বছরে এই প্রকল্প থেকে আয় করেন প্রায় ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

মা বিউটি বড়ুয়ার অবদানকে সাফল্যের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করে অনামিকা বলেন, আমার আজকের এ সাফল্যের পেছনে আমার মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। এক সময়ে সংসারে অভাব অনটন ছিলো। সেসময় মায়ের সাথে কাজ করতে গিয়ে আমি আজকের এ অবস্থানে আসতে পেরেছি।

বিউটিশিয়ান অনামিকা আরো বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্থায়ী ও অস্থায়ী ভিত্তিতে সর্বমোট প্রায় ১৫ জন যুব মহিলার কর্মসংস্থান হয়েছে। অনামিকা বিউটি পার্লার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্থানীয়ভাবে প্রায় ১০০ জন যুব মহিলা আত্মনির্ভরশীল হয়েছে। এছাড়াও আমি খাগড়াছড়ির জাতীয় মহিলা সংস্থার ট্রেনিং সেন্টারে এক জন প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছি।

কসমেটোলজি এবং লেজার এস্থেটিক্স এর ওপর বিদেশে লেখাপড়া করার স্বপ্ন দেখছেন পার্বত্য জেলার তরুণ উদ্যোক্তা অনামিকা। তবে নিজে প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন না বলেও তিনি জানান এই প্রতিবেদককে।

জাতীয় মহিলা সংস্থা, খাগড়াছড়ি শাখার চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বাসস’কে বলেন, সৎ, উদ্যমী ও আত্মপ্রত্যয়ী এই অনামিকা বডুয়া বর্তমানে খাগড়াছড়ি পাবর্ত্য জেলায় আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টির এক গৌরবময় উদাহরণ। পাশাপাশি তিনি একজন দক্ষ বিউটিফিকেশন প্রশিক্ষকও।

তিনি আরও বলেন, খাগড়াছড়িতে অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী বিউটিশিয়ান অনামিকা বডুয়া জাতীয় মহিলা সংস্থা, খাগড়াছড়ির বুটিক্স-এর ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তিনি তার প্রতিষ্ঠানে যুব মহিলাদের বুটিক্স ও বিউটিফিকেশনের ওপর প্রশিক্ষণ দেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
‘মওদূদীর ইসলাম’ বলে স্বতন্ত্র কোন ইসলাম নেই: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
ভ্যান্স ২০২৮ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন 
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পত্র 
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দুই পল্লী চিকিৎসককে ১ লাখ টাকা জরিমানা
মিরপুরে জাল টাকা ও প্রিন্টারসহ যুবক গ্রেফতার
জাতীয় স্বার্থে সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকুন: তারেক রহমান 
শেখ সেলিম ও তার পরিবারের ব্যাংক ও বিও অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ
হাসিনার সময়ে পুরো দেশটাই জেলখানা ছিল: পরিবেশ উপদেষ্টা 
রুশ তেল কেনায় ভারতীয় পণ্যে আরও ২৫% শুল্ক বসালেন ট্রাম্প
বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতুর পরিকল্পনা অনুমোদন ইতালির
১০