বাসস
  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:০৪
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৩৪

রাজস্ব খাতে নেওয়া হচ্ছে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের চাকরি

কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছে জনগণ। ছবি : বাসস

।। বরুন কুমার দাশ ।। 

ঢাকা, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : রাজস্ব খাতে নেওয়া হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) চাকরি। সবকিছু ঠিক থাকলে তাদের চাকুরি আগামী মার্চ মাসে রাজস্ব খাতের অন্তর্ভুক্ত হবে।  

অপারেশন প্ল্যান (ওপি) অনুমোদন না হওয়ায় জুন থেকে এখন পর্যন্ত টানা ৮ মাস বেতন পাননি সিএইচসিপিরা। রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হলে একবারে ৯ মাসের বকেয়া বেতন পাবেন তারা। 

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি ও স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. আবু মুহাম্মদ জাকির হোসেন বাসসকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন। 

এই ক্লিনিকে শুধু রোগের চিকিৎসা নয়; চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ এবং স্বাস্থ্যের উন্নয়ন নিয়ে বেশি কাজ করবে। ইতোমধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট প্রবিধান মালা তৈরির প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। এটা চুড়ান্ত হলে সিএইচসিপিদের উপজেলা ও জেলা পর্যায় পর্যন্ত পদায়ন করা হবে বলেও জানান তিনি।

দেশে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এই ক্লিনিক থেকে এখন ২২ প্রকার ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। কিছু কিছু কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। সকল কমিউনিটি ক্লিনিক থেকেই উচ্চরক্তচাপ ও ডায়বেটিসের ওষুধ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এখান থেকেই রোগী রেফারেল সিস্টেম চালু হবে। সপ্তাহে দুই দিন দুই জন করে ডাক্তারও বসবেন কমিউনিটি ক্লিনিকে। তারা অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রেফারেল রোগী দেখবেন। 

টারসিয়ারি লেভেলে চাপ কমানো জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক শক্তিশালী করা হবে। সেজন্য যত ধরনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার তা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে সিএইচসিপি দীর্ঘদিনের দাবির বাস্তবায়নের প্রথমে রাজস্বকরণ ও পরে পদায়নের কথা ভাবছে সরকার।

আবু মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, সিএইচসিপিদের ১৩ হাজার ৯২৬ জনের একটা তালিকা অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাদের চাকুরী রাজস্বকরণ শুধু একটা ধাপ বাকি আছে। মিটিংয়ের পর নোটিফিকেশন হবে। এরপর অর্থমন্ত্রণালয় বেতনের টাকা কমিউনিটি ক্লিনিট ট্রাস্টের ফান্ডে পাঠাবে। মনে হচ্ছে এটা মার্চের মাঝামাঝির সময় লাগবে, এর আগে হবে না। তখন বাকেয়া সব বেতন তারা একবারে পাবেন। সিএইচসিপিরা আগে ১৪ তম গ্রেডের বেতন পেতেন। অর্থমন্ত্রনালয় থেকে ১৬ তম গ্রেড করা হয়েছে। রাজস্বকরণ হলে তারা ১৬ তম গ্রেডেই বেতন পাবেন। 

কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রবিধানমালা তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর যে আইনটা হয়েছিল, কিন্তু এটার কোনো রুল নেই। সব সময় আইনের পর এটা রুল হয়। কিন্তু সে সময়ের রুলটা এখনো হয়নি। এটার জন্য দ্রুত একটা মিটিং হবে এবং মিটিংয়ে সিএসসিপিদের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। রুল হয়ে গেলে ভবিষ্যতে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

প্রবিধানমালায় কি থাকবে সেই প্রসঙ্গে জাকির হোসেন বলেন, সিএইচসিপিরা কোনো ধরনের কাজ করবে, ওদের ক্যারিয়ার লেটারটা কেমন হবে? 

সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত সপ্তাহে ৬ দিন (শনিবার হতে বৃহস্পতিবার) সকাল ৯ টা হতে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা থাকে। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) প্রতি কর্মদিবসে কমিউনিটি ক্লিনিকে উপস্থিত থেকে সেবাপ্রদান করেন এবং সিএইচসিপি-র পাশাপাশি স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারী প্রত্যেক সপ্তাহে নূন্যতম ৩ দিন করে (পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে) কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা প্রদান করেন।