ঢাকা, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫(বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
‘দেশে জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত সরকার ছাড়া গণতন্ত্র ব্যর্থ হতে পারে’ এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘কেউ যদি জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত সরকার গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণতন্ত্র গ্রহণ করতেও তারা ব্যর্থ হবে। সে জন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। আমরা মনে করি, গণতন্ত্রের পথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’
শামসুজ্জামান দুদু আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, ‘দেশে একটা ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়েছে। ফ্যাসিবাদের গ্রাস থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। এ ব্যাপারে যেসব ছাত্র জনতা অকুণ্ঠ-চিত্তে এবং নিঃস্বার্থভাবে বুলেট বুকে ধারণ করেছে,জীবনকে উৎসর্গ করেছে- আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের জন্য প্রার্থনা করি।’
তিনি বলেন, এত বড় একটা পরিবর্তনের পরে, বাংলাদেশের মানুষ আশায় বুকে বেঁধেছিল এবং তারা ভেবেছিল, তাদের জীবন-যাত্রার মান অন্ততপক্ষে বিগত সরকারের শাসনামলের তুলনায় এবার অনেক ভালো থাকবে। কিন্তু, দুঃখের বিষয় হচ্ছে,কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুরুতেই দ্রব্যমূল্যের দাম একটু কমের দিকে গেলেও পরবর্তীতে দাম বেড়ে যায়।
দুদু উল্লেখ করেন, মাঠ পর্যায়ের যে কৃষকরা সঠিক দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করেছে, সেটির ধারের কাছেও তারা যেতে পারেনি। এ দেশের কৃষক শ্রমিক সবসময় অবহেলিত থেকেছে এবং নির্মমতার শিকার হয়েছে।
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘বিএনপি গরিব ও খেটে খাওয়া মানুষের দল। কামার, কুমার, কুলি, মজুর ঠিক তেমনি মধ্যবিত্তের দল। সব শ্রেণীর মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে বিএনপি। সেই বিএনপি আজকে এ সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানালো কিন্তু সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ৬ মাস চলে যাওয়ার পরেও ব্যর্থ হয়েছে বলে সবাই মনে করছে। এ সরকার বাজার দর এখনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। দেশের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছেন না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শুরুতেই বলেছিলাম,সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেবে। বর্তমান সরকারের প্রতি সমর্থনকে কাজে লাগানোর যে দক্ষতার দরকার ছিল, সেটা তারা করতে পারেনি। কিন্তু এ সরকারকে এখন পর্যন্ত আমরা সমর্থন করি। এ সরকারের সমালোচনা করি সঠিক পথে থাকার জন্য। কারণ, এ সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে চাই না।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘দেশের মধ্যে এক ধরনের নির্বাচনের আমেজ তৈরি হতে যাচ্ছে। সেই জায়গায় কিছু কিছু রাজনৈতিক দল প্রয়োজনীয় সংস্কার নয়, সংস্কার করে নির্বাচনের কথা বলছেন। বলতেই পারে! সকল রাজনৈতিক দলতো স্বাধীন। সকল রাজনৈতিক দলের নিজস্ব কর্মসূচি আছে। তারা যদি মনে করে যে,এই সরকারের সংস্কার দরকার, সেই কথা তারা বলতে পারে। আমার কাছে মনে হয়, নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নিয়ে সংস্কার করতে পারে। জনগণের ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত সরকার যদি কেউ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণতন্ত্র গ্রহণ করতে তারা ব্যর্থ হবে। সে জন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’
ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে এবং ফোরামের সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভায় বিএনপি’র সহ-তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মৎস্যজীবী দলের নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।