আইআইইউসি’র ১০ কোটি টাকা আত্মসাত, সাবেক এমপি নদভীকে কারাফটকে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ

বাসস
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ২১:২৭
সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রাম, ২০ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সম্মেলন কক্ষে দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদের নেতৃত্বে একটি দল তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

জানা গেছে, গত ১২ মার্চ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ কারাবন্দি নদভীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করেন। পরে গত রোববার শুনানি শেষে আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেন। 

দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নেজামুদ্দিন নদভী আইআইইউসি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি এবং আরও লোকজন মিলে ওই ট্রাস্ট থেকে সম্মানীর নামে প্রায় দশ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগ আমরা আরও আগে থেকেই অনুসন্ধান করছি। দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। আদালতের অনুমতি নিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষে অভিযোগের সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দুদক সূত্রে জানা গেছে, আইআইইউসি বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান নদভী ও অন্যদের বিরুদ্ধে সম্মানীর নামে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের একটি অভিযোগ দুদকে জমা পড়ে। তা পর্যালোচনা করে দুর্নীতি তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২১ সালে বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান হয়ে নদভী একটি বলয় তৈরি করেন। আইআইইউসি টাওয়ার থেকে সম্মানীর নামে নেজামউদ্দিন নদভী বিধিবহির্ভূতভাবে একাই ১০ লাখ ৯ হাজার টাকা নিয়েছেন। 

এ ছাড়া তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা চৌধুরী ৩ লাখ ৩৭ হাজার, প্রফেসর ড. কাজী দ্বীন মুহাম্মদ ৬ লাখ ৩০ হাজার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী ২ লাখ টাকা, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হুমায়ন কবির ৪৫ হাজার, এসিএফডি পরিচালক আফজাল আহমদ ৪৫ হাজার, ড. মুহাম্মদ মাহী উদ্দীন ৪৫ হাজার, রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ শফীউর রহমান ৪৫ হাজার, সরওয়ার আলম ১০ হাজার, জিয়াউর রহমান ১০ হাজার, মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ১০ হাজার, মিডিয়া উপদেষ্টা খালেদ মাহমুদ ১ লাখ, প্রসেফর মোহাম্মদ সালেহ জহুর ১ লাখ, প্রফেসর ফসিউল আলম ৫০ হাজার এবং প্রফেসর আবদুর রহিম ২৫ হাজার টাকা মাসিক সম্মানী হিসেবে নিয়েছেন। সম্মানীর নামে টাওয়ার ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৬ জন তিন বছরে ১০ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা নিয়েছেন। 

এ ছাড়া সাবেক এমপি নদভী গাড়ি ক্রয়ের জন্য ৬৫ লাখ টাকা ঋণ, ছেলের বিদেশ যাওয়ার জন্য ঋণ, স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য আইআইইউসি’র অর্থ খরচ করেছেন ইচ্ছামতো। 

চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত নদভীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ক্ষমতার অপব্যবহার করে, রাজনৈতিক পরিচয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে দুদক তথ্য পাচ্ছে। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বিদেশ গমন রহিত করা আবশ্যক।’ 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ভোলায় তোফায়েলের ছেলে বিপ্লব ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বিএমইউতে কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি ট্রেনিং প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত
জলবায়ু সংকট উপকারী প্রজাতির প্রাণীর বিলুপ্তি ত্বরান্বিত করছে
গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন যেকোনো দিন : চিফ প্রসিকিউটর
চট্টগ্রামে জাহাজ থেকে কর্ণফুলী নদীতে পড়ে নাবিক নিখোঁজ
ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ২০ জুলাই
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে ৫ দিনব্যাপী ভর্তি মেলা শুরু
ঝালকাঠিতে ১০ শহীদের পরিবারকে অর্থ সহায়তা প্রদান
চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব: অতিরিক্ত চিকিৎসাকর্মী চাইলেন রিইউনিয়নের হাসপাতাল প্রধান
উপদেষ্টার ভুয়া উক্তি নিয়ে নিউজের ছড়াছড়ি সনাক্ত : বাংলাফ্যাক্ট
১০