ঢাকা, ২৫ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : রাজধানীর শাহবাগ থানা পুলিশ শাহবাগ এলাকা থেকে টেস্ট ড্রাইভের কথা বলে টয়োটা হ্যারিয়ার জিপ গাড়ি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গাড়ি ও বিদেশি পিস্তলসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতের নাম আহসান আহমেদ ওরফে মাসুম (৩৬)। তার হেফাজত থেকে ছিনতাই হওয়া জিপ গাড়ি, একটি ম্যাগজিনসহ পাঁচ রাউন্ড গুলি ভর্তি বিদেশি পিস্তল ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) ভোরে গুলশান থানার ৪১ নম্বর রোডের ‘আমারি ঢাকা’ নামক হোটেলের সামনে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, পরীবাগ গার্ডেন টাওয়ারে অবস্থিত ‘হইল ডিলস্ (বারভিডা- ১৭৯১)’ নামের একটি গাড়ির শো-রুমের স্বত্বাধিকারী মাশরুর নাঈর (২৯) জাপানিজ গাড়ির একজন আমদানিকারক ও ডিস্ট্রিবিউটর।
গত ৭ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টায় অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি ফোন করে টয়োটা হ্যারিয়ার জিপ গাড়ি ক্রয় করার জন্য মাশরুর নাঈরের সাথে কথা বলে। কথাবার্তার এক পর্যায়ে মাশরুর নাঈর সেই ব্যক্তিকে তার বাসার গ্যারেজে গাড়ি দেখার জন্য আসতে বলে।
পরদিন রাত পৌনে ৮টার দিকে সেই ব্যক্তি বাসার গ্যারেজে আসে এবং গ্যারেজের বাইরে আরও দুইজন অবস্থান করে। পরে একটি টয়োটা হেরিয়ার জিপ গাড়ি টেস্ট ড্রাইভ দেওয়ার জন্য মাশরুর নাঈরের চাচাত ভাই মো. পিয়াল মাহমুদকে নিয়ে সেই অজ্ঞাতনামা তিনজন ব্যক্তি গাড়িটিতে উঠে।
তারা গাড়িটি চালিয়ে রাত আনুমানিক সোয়া ৮টার সময় শাহবাগ থানাধীন পিজি হাসপাতালের সামনে মেট্রোরেল স্টেশনে আসে। তখন গাড়িটি থামিয়ে তাদের একজন পিয়াল মাহমুদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি নিয়ে চলে যায়। জিপ গাড়ির আনুমানিক মূল্য ৮৫ লাখ টাকা।
ঘটনার কিছুক্ষণ পর ছিনতাইকারীরা মাশরুর নাঈরের হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা দিয়ে মামলা না করার জন্য ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। এ ঘটনায় গাড়ির মালিক মাশরুর নাঈরের অভিযোগের ভিত্তিতে শাহবাগ থানায় গত ৯ মার্চ একটি মামলা রুজু করা হয়।
থানা সূত্রে আরও জানায়, মামলাটি তদন্তকালে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা হয়। এরপর সোমবার (২৪ মার্চ) রাত সোয়া তিনটায় গুলশান থানার ৪১ নম্বর রোডের আমারি ঢাকা নামক হোটেলের সামনে অভিযান চালিয়ে আহসান আহমেদ ওরফে মাসুমকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আহসান আহমেদ ওরফে মাসুম বুয়েটের একজন সাবেক শিক্ষার্থী এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে অত্যন্ত দক্ষ। সে একজন পেশাদার অপরাধী। এর আগে ছিনতাইসহ এরকম বহু অপরাধের সাথে সে জড়িত ছিল বলে স্বীকার করেছে।
সে গাড়ি ছিনতাই করে নিয়ে পরবর্তীতে গাড়ির মালিকদের নিকট গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ দাবি করতো। গ্রেফতারকৃত মাসুমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় গাড়ি ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।