ঢাকা, ১০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘ভারত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদেরকে দাবি করতে পারে না। ভারত একজন ফ্যাসিস্টকে জায়গা দিয়ে নিজেরকেও ফ্যাসিস্ট প্রমাণ করেছে।’
তিনি বলেছেন, ভারতকে আমরা বন্ধু রাষ্ট্র মনে করি। কিন্তু ভারত বাংলাদেশকে বন্ধু রাষ্ট্র মনে করে না। তারা যা করছে, তাতে ভারত যে বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র সেটি বলা খুব কঠিন। বাংলাদেশের লুটেরা, গণহত্যাকারী, বাংলাদেশকে নিশ্চিহ্ন করার মুক্তিযোদ্ধা বিরোধী শক্তি শেখ হাসিনাকে জায়গা দিয়েছে। তাকে জায়গা দিয়ে ভারত নিজেদেরকে গণতন্ত্রের স্বপক্ষের শক্তি বলে নিজেদের দাবি করতে পারে না। কারণ, একজন ফ্যাসিস্ট শুধু ফ্যাসিস্টের সঙ্গেই থাকতে পারে।
আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ এর উদ্যোগে আয়োজিত ভারতে মুসলিম নির্যাতন ও হত্যার প্রতিবাদে নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আমরা ফ্যাসিস্টকে রুখে দিয়েছি। আমাদের দেশে তার (শেখ হাসিনা) জায়গা হয়নি। তাকে আমরা তাড়িয়ে দিয়েছি। সে জীবন বাঁচানোর জন্য শুধু ভারত পালায়নি, তার আসল ঠিকানাই হচ্ছে ভারত। আমরাতো হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদকেও পরাজিত করেছিলাম। কিন্তু তিনি ভারতে যায়নি। তিনি জেলখানায় গিয়েছিলেন। ভারত বলছে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য তারা জায়গা দিয়েছে। মূলত রক্ষা নয়, শেখ হাসিনার আদর্শ হচ্ছে ভারত এবং তার ঠিকানাও ভারত।
ভারত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে নানা রকম উসকানি দিয়ে উল্লেখ করে বিএনপি’র এই নেতা বলেন, আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ভারত এদেশে গণতন্ত্র বিনাশী শক্তিকে শুধু রাখেনি, এদেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকেও ধ্বংস করেছে। ভারত শেখ হাসিনার মধ্য দিয়ে তিনটা নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছিল বাংলাদেশে কোনো নির্বাচনী ব্যবস্থা নেই। শেখ হাসিনা নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস এবং গণতন্ত্র ধ্বংসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সকল অর্থে ভারতের ক্রীতদাসে পরিণত করেছিল। হয়তো আরেকটু সময় পেলে বাংলাদেশকেও ভারতের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলতো।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দুদু বলেন, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য নানানভাবে, নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেজন্য আমি বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানাবো, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনাদের প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পূর্ণ করে, এ দেশে একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখা কঠিন হবে। এসময় তিনি ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় প্রায় ৫০ হাজারের উপরে নারী, পুরুষ এবং শিশুকে নির্বিচারে হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র চেয়ারপারসন উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রদান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি প্রমুখ।