রমনা পার্কে পদ্ম ফুলের কোমল হাসি

বাসস
প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১৭:১৯ আপডেট: : ১৬ মে ২০২৫, ১৯:১৩
রমনা পার্কে পদ্ম ফুলের কোমল হাসি। ছবি: বাসস

// মাহামুদুর রহমান নাযীদ //

ঢাকা, ১৬ মে, ২০২৫ (বাসস) : ঢাকা শহরের ফুসফুস খ্যাত রমনা পার্ক প্রকৃতির এক শীতল আশ্রয়। অনেক মানুষ প্রতিদিন এখানে ছুটে আসে নির্মল বাতাসে শ্বাস নেয়ার জন্যে। দেশি-বিদেশি গাছ-গাছালির ফাঁকে এখন বাড়তি পাওয়া পার্কের নার্সারির পুকুরে হাসতে থাকা ও ভাসতে থাকা ফুটন্ত পদ্ম ফুল।

রমনা পার্কের নার্সারিতে খনন করা হয়েছে ছোট্ট একটি পুকুর। সেখানেই যত্নে পরিচর্যা করা হচ্ছে পদ্ম ফুল। ফুলগুলো এখন পরিপূর্ণ রূপে ফুটে আছে। পাতার মাঝেই উঁকি দিচ্ছে সাদা আর গোলাপি রঙের পদ্ম ফুলগুলো।

দেশের গ্রামাঞ্চলের প্রাকৃতিক জলাধার হাওর-বাঁওড়, খালে-বিলে ও ঝিলের পানিতে পদ্ম ফুল ফুটতে দেখা যায়। ফুটন্ত ফুলের বাহারি রূপ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। কিন্তু ইট-কাঠের যান্ত্রিক এই রাজধানীর রমনা পার্কে ফুটন্ত পদ্ম ফুলগুলো যেনো বলছে: হে নাগরিকগণ আসুন, এসে দু’দণ্ড আমার কোমল হাসি দেখুন, প্রশান্তি নিন।

সদরঘাট থেকে পার্কে বেড়াতে আসা দর্শনার্থী মো. রবিন বলেন, শহরে পদ্ম ফুল দেখবো এ কথা ভাবতেই পারিনি। ছোটবেলায় নানাবাড়িতে দেখেছিলাম। আজ রমনায় এসে আবার দেখলাম। দেখে মনে হচ্ছে চোখের প্রশান্তি। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহরিয়ার আহম্মেদ বলেন, ‘সাধারণত এটি গ্রামীণ জলাভূমি ও প্রাকৃতিক জলাধারে জন্মে থাকে। তবে শহরের মধ্যে বিশেষ করে রমনা পার্কের মতো জায়গায় পদ্ম ফুল একটি দারুণ উদ্যোগ। এটি প্রমাণ করে, শহরের যান্ত্রিক জীবনের ভেতরেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণ ও উপভোগ করা সম্ভব।’

তিনি বলেন, পদ্মের মূল বা কন্দ সাধারণত কাদামাটিতে নিবিড়ভাবে গাঁথা থাকে এবং এটি একটি ভূ-আশ্রয়ী জলজ উদ্ভিদ হওয়ায় এর বৃদ্ধি সম্পূর্ণ নির্ভর করে পানির গভীরতা, আলো এবং তলদেশের মাটির গুণমানের ওপর। তাছাড়াও এটি শুধু চোখের আরাম নয়, শিক্ষারও অংশ। শিশু-কিশোরেরা যখন নগর পরিবেশেই পদ্ম ফুল দেখতে পায়, তখন তারা প্রকৃতি ও শেকড়ের সঙ্গে নতুনভাবে সংযুক্ত হয়। পাশাপাশি, এই উদ্যোগ শহরে জীববৈচিত্র্য রক্ষার দিকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়।

উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, পদ্ম ফুল কন্দ জাতীয় ভূ-আশ্রয়ী বহু বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। এটির বংশবিস্তার ঘটে কন্দের মাধ্যমে। পাতা পানির ওপরে ভাসলেও এর কন্দ বা মূল জলের নিচে মাটিতে থাকে। পানির উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে গাছ বৃদ্ধি পেতে থাকে। পাতা বেশ বড়, পুরু, গোলাকার ও রং সবুজ। পাতার বোটা বেশ লম্বা, ভেতর অংশ অনেকটাই ফাঁপা থাকে। ফুলের ডাটার ভিতর অংশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য ছিদ্র থাকে। ফুল আকারে বড় এবং অসংখ্য নরম কোমল পাপড়ির সমন্বয়ে সৃষ্টি পদ্ম ফুলের। ফুল ঊধ্বর্মুখী, মাঝে পরাগ অবস্থিত। ফুটন্ত তাজা ফুলে মিষ্টি সুগন্ধ থাকে। রৌদ্রের প্রখরতা বৃদ্ধির সঙ্গে-সঙ্গে ফুল সংকুচিত হয়ে যায় ও পরবর্তীতে রৌদ্রের প্রখরতা কমে গেলে আবার ফুটে ফুলটি। ফুটন্ত ফুল এভাবে বেশ অনেক দিন ধরে সৌন্দর্য বিলিয়ে যায়। পদ্ম ফুলের রং মূলত লাল সাদা ও গোলাপীর মিশ্রণ যুক্ত। তাছাড়া নানা প্রজাতির পদ্ম ফুল দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে লাল, সাদা ও নীল রঙের ফুল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও প্রধান সংস্কার হচ্ছে খুনিদের বিচার করা : হাসনাত আবদুল্লাহ
বিএনপির ৩১-দফা ‘রাজনীতির মহাকাব্য’: সালাহউদ্দিন আহমেদ
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা কমলে দেশ মহাসংকটে পড়বে : এবি পার্টির চেয়ারম্যান
জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধারে বেজাকে দেওয়া সোনাদিয়া দ্বীপের ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল
জবি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছে সরকার
ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারল বাংলাদেশ নারী ইমার্জিং দল
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা তার বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন হোসেনকে
ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন সংগ্রাম করছে জামায়াত : ডা. শফিকুর রহমান
ঢাকায় চলবে বৈদ্যুতিক বাস : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
বেনাপোলে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক হওয়ার পথে
১০