খুলনা, ১৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ বিগত ১৬ বছরে সাত হাজারেরও বেশি মানুষকে অপহরণ, গুম এবং সীমাহীন নির্যাতন-নিপীড়নের মাধ্যমে হত্যা করেছে। সর্বশেষ তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৪ শ’ মানুষকে হত্যা করেছে। এছাড়া তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন গণতন্ত্র এবং ভোটের অধিকারসহ মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ধ্বংস করেছে। লুটপাট করে ব্যাংকিং খাতও ধ্বংস করেছে। এসব কারণে আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের রাজনৈতিক মৃত্যু ডেকে এনেছে। ঢাকার রাজপথে আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে, আর দাফন হয়েছে দিল্লিতে।
আজ শনিবার খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠে অনুষ্ঠিত তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি’র অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। সঞ্চালনায় ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাকিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিপুল সংখ্যক তরুণ নেতাকর্মী সমাবেশে যোগ দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে যারা ভোটার হয়েছেন ‘আমি আর ডামি’ নির্বাচনে তারা ভোট দিতে পারেননি। এভাবে এ তিনটি নির্বাচনে পাঁচ কোটি তরুণ-যুবক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে দেশে সংগঠিত হয়েছে রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থান। এর মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক অধিকারের স্বপ্ন দেখছে মানুষ। দেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আর রক্ত দিতে হবে না, মিছিল করতে হবে না এ প্রত্যাশা সবার।
তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘের রিপোর্ট বলছে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ১৪ শ’ মানুষকে হত্যা করেছে। হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ মেরেছে। তার পরেও সে অনুতপ্ত হয়নি, ক্ষমা চাইনি। উলটো দিল্লিতে বসে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফার মাধ্যমে একটি আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে মানুষ। এ দফার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ দেশের তরুণরাই ৩১ দফা বাস্তবায়নের দূত হিসেবে ভূমিকা পালন করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। বিশেষ বক্তা ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন। এছাড়াও কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন বিকাল সাড়ে চারটায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হলেও বেলা ১১ টার পর থেকেই খুলনা এবং বরিশালের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ও মহানগর থেকে ছাত্রদল যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীরা সিল নিয়ে খুলনার সার্কিট হাউস ময়দানে হাজির হয় মিছিল আর শ্লোগানে মহানগরী খুলনা উত্তাল হয়ে ওঠে।