ঢাকা, ১৮ মে, ২০২৫ (বাসস) : নিয়োগে অনিয়মসহ নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থার প্রধান কার্যালয় থেকে আজ এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানকালে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এবং রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। রেকর্ডপত্রের প্রাথমিক পর্যালোচনায় ২০২১, ২০২২, ২০২৩ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। আবেদনের প্রাথমিক শর্ত পূরণ না করা সত্ত্বেও বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে বলে টিমের কাছে পরিলক্ষিত হয়। চাকরিতে আবেদনের নির্ধারিত বয়স না থাকা, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির উল্লিখিত সময়ের পরে আবেদন করাসহ অন্যান্য অনিয়মের প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পায় দুদক টিম।
এদিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে সংযোগ সড়ক বিহীন সেতু নির্মাণ করে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন ঠাকুরগাঁও জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। এনফোর্সমেন্ট টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখে যে নির্মাণাধীন ব্রিজটির কোনো সংযোগ সড়ক নেই। ব্রিজের কাজের গুণগত মান নির্ণয়ের জন্য টিম ওই ব্রিজের নির্মাণ উপকরণের নমুনা সংগ্রহ করে, যা এলজিইডি’র নিরপেক্ষ প্রকৌশলী দ্বারা রিবাউন্ড হ্যামারের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তীতে দুদক টিম উপজেলা পিআইও অফিস পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে নির্মাণ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা, রিবাউন্ড হ্যামারের মাধ্যমে পরীক্ষার প্রাপ্ত ফল এবং সংগৃহীত নমুনার ল্যাবরেটরি পরীক্ষার ফলাফল পর্যালোচনাপূর্বক টিম কমিশনের কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
এ ছাড়া লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রদানে অনিয়মসহসহ নানাবিধ অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কুড়িগ্রাম জেলা কার্যালয় থেকে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। টিম ছদ্মবেশে ওই হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে ওষুধ কাউন্টারের তিনজন রোগীর প্রেসক্রিপশন পরীক্ষা করে দেখে যে, প্রেসক্রিপশনে নির্ধারিত ওষুধ দেওয়া হলেও সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসকের স্বাক্ষর ছিল না। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি আবাসিক মেডিকেল অফিসারের নজরে আনা হলে তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। ওয়ার্ড ও ওয়াশরুম পরিদর্শনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় গুরুতর ঘাটতি দেখা যায়। রোগীদের সরবরাহকৃত রান্না করা মাছের ওজন নির্ধারিত ৯০ গ্রামের স্থলে ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম পাওয়া যায়, যা তত্ত্বাবধায়ক কর্তৃপক্ষের নজরে এনে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। হাসপাতালের ওষুধ মজুদের তালিকা জনসমক্ষে প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা পরিত্যক্ত অবস্থায় ভেতরে পাওয়া যায়, যা এনফোর্সমেন্ট টিম তাৎক্ষণিকভাবে দৃশ্যমান স্থানে টানানোর ব্যবস্থা নেয়।