অপ্রতুল বিনিয়োগে স্বাস্থ্যসেবার মান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছায়নি : ডা. রফিক

বাসস
প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২৫, ২১:৩৯
সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংলাপে কথা বলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম। ছবি: বাসস

ঢাকা, ২৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, অপ্রতুল বিনিয়োগের কারণে দেশের চিকিৎসা সেবার মান এখনো কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি।

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে দীর্ঘ দুই দশক ধরে বাজেটের বরাদ্দ মোট জিডিপির ১ শতাংশেরও কম-যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশকৃত ৫ শতাংশ থেকে অনেক দূরে।’

আজ সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিসি) আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন’ শীর্ষক সংলাপের এক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও শিক্ষা খাতের বিভিন্ন সংকট ও সমাধান নিয়ে আলোচনা হয়।

ডা. রফিক জানান, দেশের ৭৭টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ৬টিতে এনাটমি, ১৬টিতে ফিজিওলজি, ১৭ টিতে বায়োকেমিস্ট্রি এবং ১৮টিতে ফরেনসিক মেডিসিনের অধ্যাপক নেই। ফলে শিক্ষকদের চরম ঘাটতির কারণে প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক রাখার বাধ্যতামূলক শর্ত মানা সম্ভব হচ্ছে না, যা মেডিকেল শিক্ষার মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

তিনি বলেন, একজন দক্ষ চিকিৎসক তৈরির জন্য ভালো শিক্ষক ও মানসম্মত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। অথচ মেডিকেল অ্যাক্রেডিটেশন না থাকায় দেশে অর্জিত ডাক্তারি ডিগ্রি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাচ্ছে না। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে স্বাস্থ্যখাতে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়।

বর্তমানে দেশে সরকারি চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার ৯০০ জন এবং নার্সের সংখ্যা ৪১ হাজার ১৪৬ জন। অনুপাত অনুযায়ী প্রতি হাজার জনে চিকিৎসক মাত্র ০.৭ জন। রোগীর চাপের কারণে অনেকেই যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিএনপির প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য সংস্কার পরিকল্পনায় এসব সমস্যার সমাধান তুলে ধরা হয়েছে বলেও জানান ডা. রফিক।

তিনি বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। টেকসই গণতন্ত্র থাকলে স্বাস্থ্যখাতসহ প্রতিটি খাত কাঙ্ক্ষিতভাবে সংস্কার করা সম্ভব। তবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে সেটি দেশের জন্য অশনিসংকেত বয়ে আনবে।

সংলাপে এনসিপির ডা. তাসনিম জারা মেডিকেল কলেজগুলোতে সঠিকভাবে ইন্টার্নশিপ কার্যক্রম পরিচালনার ওপর গুরুত্ব দেন। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, শিক্ষার বহুমুখী সংকট সমাধান ছাড়া দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরী, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারওয়ার মিলন, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ মুস্তাক হোসেন, শিক্ষাবিদ ও ইতিহাসবিদ ডা. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সিজিসি সভাপতি জিল্লুর রহমান, শিক্ষাবিদ ডা. শওকত আরা হোসেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মোহাম্মদ কামরুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য ডা. মামুন আহমেদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ল্যাবএইড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নাজিম উদ্দিন আহমেদ, জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের চেয়ারম্যান সরদার এ নাঈম, ট্রান্স-ফেমিনিস্ট ও অধিকারকর্মী হো চি মিন ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যা বিজ্ঞানের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. মোহাম্মদ মাইনুল ইসলাম, জি-৯ এর মহাসচিব ডা. সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত এবং আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গবেষণা সহকারী ডা. ডি. কে. শীল অর্পণ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট 
জিম্মিদের দ্বিতীয় দলকে রেড ক্রসের কাছে হস্তান্তর
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল ১৬ অক্টোবর
কুমিল্লায় দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
ইউক্রেনকে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পারেন, পুতিনের প্রতি ট্রাম্পের হুমকী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
গাজা শান্তি সম্মেলনে যোগ দেবে না ইরান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নওগাঁয় তরুণদের মধ্যে ফুটবল ও জার্সি বিতরণ
দুর্যোগ প্রশমন দিবসে ফেনীতে ভূমিকম্প বিষয়ক মহড়া
খুলনায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত
১০