ঢাকা, ২৮ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : শিশুদের টাইফয়েড প্রতিরোধে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় শুরু হচ্ছে ‘টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫’। এক মাসব্যাপী এ কর্মসূচিতে প্রায় ১০ লাখ শিশুকে বিনামূল্যে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) দেওয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার নগরভবন অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অ্যাডভোকেসি সভায় এ তথ্য জানানো হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম।
সভায় জানানো হয়, টিকাদান কর্মসূচি দুই ধাপে বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপে ১২ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ডিএসসিসির আওতাধীন ২ হাজার ২৫২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে ১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪৫০টি অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ও প্রান্তিক শিশুদের টিকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া ১২ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিটি ওয়ার্ড কার্যালয়ের ৭৫টি স্থায়ী কেন্দ্র থেকেও টিকা গ্রহণ করা যাবে। তবে শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিনে টিকাদান কার্যক্রম চলবে না।
শিশুর টিকা গ্রহণের জন্য জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এজন্য অভিভাবককে শিশুর ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করতে হবে এবং টিকা কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। যেসব শিশুর জন্ম নিবন্ধন এখনো সম্পন্ন হয়নি তাদের দ্রুত ওয়ার্ড কার্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জন্ম নিবন্ধন সেবা প্রদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভায় বক্তারা বলেন, টাইফয়েড একটি ব্যাকটেরিয়া জনিত সংক্রমণ যা দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। সময়মতো টিকা গ্রহণ করলে এ রোগ ও এর জটিলতা প্রতিরোধ করা সম্ভব। টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক পরীক্ষিত।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই এই টিকাদান কর্মসূচিকে শিশুদের জন্য একটি উৎসবে রূপ দিতে। অভিভাবকদের সচেতনভাবে সন্তানদের টিকা গ্রহণে উৎসাহিত করতে হবে।’
অ্যাডভোকেসি সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সমাজসেবা অধিদপ্তর, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, থানা শিক্ষা অফিসার, রেড ক্রিসেন্ট, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন। এ ছাড়া ডিএসসিসির সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. নিশাত পারভীন এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সময়মতো টিকা গ্রহণ শুধু শিশুদের নয়, পুরো সমাজকে টাইফয়েড সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।