ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন
নাটোর, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নাটোরে প্রথমবারের মত মুগ ডালের আবরণে প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে। শহরের উত্তর আলাইপুর নতুনপাড়া পূজা মণ্ডপে স্থাপিত এই প্রতিমা দর্শনে হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটছে। দর্শনার্থীদের মন জয় করেছে মুগ ডালের প্রতিমা।
দুর্গোৎসবের প্রথম দিনেই হাজারো দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে এই মণ্ডপে। অনেকে আসছেন অঞ্জলি দিতে, অনেকে আসছেন ব্যতিক্রমী এই প্রতিমা দেখতে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। শিশুরা মণ্ডপে গানের ছন্দে নাচতে থাকে। মধ্য রাত পর্যন্ত মণ্ডপে ছিল উৎসবের আমেজ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। একজন পুলিশ সদস্য ছাড়াও ছয়জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন এই মণ্ডপে।
শহরতলীর আমহাটি এলাকার প্রতিমা শিল্পী নীল কুমার দাস প্রায় আড়াই মাসের চেষ্টায় প্রতিমা তৈরির পরে সম্পূর্ণ প্রতিমাটি মুগ ডালের আবরণে দৃষ্টি নন্দন করে তুলেছেন। এ জন্য দেড় মণ মুগ ডাল ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিমার উপরে আঠা ব্যবহার করে পরম যত্নে এসব মুগের ডাল প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে নীল কুমার দাস বলেন, আমার দীর্ঘ সময়ের প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে। কারণ পূজার প্রথম দিনেই শত শত দর্শনার্থী এই প্রতিমা দর্শনে এসেছেন।
দর্শনার্থী অনিমা চক্রবর্ত্তী বলেন, মুগ ডালের আবরণে নির্মিত প্রতিমা সম্ভবত দেশের মধ্যে এই প্রথম। অনেক যত্নে এই প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিমাশিল্পীর শৈল্পিক এই সৃষ্টি সার্থক হয়েছে। প্রতিমাটি দর্শনার্থীদের মন জয় করেছে।
জয়ন্ত মানী জানান, বৈচিত্র্যময় এই সৃষ্টি। গত বছর নাটোর শহরে ধানের আবরণে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছিল। এবার পাট আর মুগ ডাল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। দেশের কোথাও মুগ ডালের প্রতিমা নির্মাণ করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই।
উত্তর আলাইপুর নতুনপাড়া পূজা মণ্ডপ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজিব সাহা জানান, চলতি বছরে আমাদের মণ্ডপে ২৮ ফুট উচ্চতায় নির্মিত গনেশ পূজা আয়োজন করা হয়-যা দেশের মধ্যে সর্ব বৃহত্তম। ব্যতিক্রমের এই ধারাবাহিকতায় এবার দুর্গাপূজায় মুগ ডালের প্রতিমা নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি এবং তা বাস্তবায়ন করি।
উত্তর আলাইপুর নতুনপাড়া পূজা মণ্ডপ কমিটির সভাপতি রতি চক্রবর্তী বলেন, কৃষি আমাদের ঐতিহ্য। মা দুর্গাও আমাদের ঐতিহ্য। এই দুইয়ের মেলবন্ধন সৃষ্টি করে আমরা মুগ ডালের আবরণে প্রতিমা তৈরি করেছি। পূজা শুরুর প্রথম দিনেই হাজারো দর্শনার্থীরা এই প্রতিমা দর্শনে ভিড় করেছেন। আগামী দিনগুলো দর্শনার্থীদের আগমন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি। আমাদের উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয়েছে।