খুলনা, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : খুলনা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংলাপ ও কর্মশালায় বক্তারা বলেন, সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও দলীয় আনুগত্য-নির্ভর নেতৃত্ব কাঠামো নারী ও তরুণদের রাজনীতি থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে।
সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আজ শনিবার ‘নেতৃত্বে নারী ও তরুণ : বাধা কোথায়?’ এই সংলাপ ও কর্মশালার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, তরুণ রাজনীতিক, নারী নেতৃত্ব ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সিজিএস প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান।
সংলাপটি ছিল ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারী ও তরুণদের সম্পৃক্ততা’ প্রকল্পের অংশ, যা নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে।
আলোচনায় জিল্লুর রহমান বলেন, খুলনা অঞ্চলে বহু নারী ও তরুণ সংগঠক সক্রিয় হলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ সীমিত।
তিনি আরো বলেন, দলগুলো এখনো নেতৃত্বের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি, যোগ্যতার চেয়ে আনুগত্যকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপি’র কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ‘নেতৃত্বের কোনো লিঙ্গ নেই। নেতৃত্ব আসে দেশপ্রেম, সাহস ও দক্ষতা থেকে।’
জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরীর সেক্রেটারি এডভোকেট জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল বলেন, ‘তরুণদের নেতৃত্বের ইচ্ছা থাকলে, কোনো বাধাই তাকে থামাতে পারে না।’
সিপিবি খুলনার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, ‘নারী নেতৃত্বের সবচেয়ে বড় বাধা পিতৃতন্ত্র, যা নারী-পুরুষ উভয়েই টিকিয়ে রেখেছে।’
এনসিপি খুলনা জেলার সংগঠক ডা. আবদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী তরুণদের দেশপ্রেম পুরনো রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারণে ম্লান হয়ে যাচ্ছে।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের খুলনা মহানগরীর সভাপতি মুফতি আমানুল্লাহ বলেন, ‘নারীর অংশগ্রহণ ছাড়া দেশের উন্নয়ন অসম্ভব।’
প্যানেল আলোচনার পর আয়োজিত কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা অনলাইন হয়রানি, পারিবারিক অনীহা, রাজনৈতিক সহিংসতা ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতাকে নারী ও তরুণদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের প্রধান বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেন।
সমাপনী বক্তব্যে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘যে রাজনীতি নারী ও তরুণকে ভয় পায়, তা টিকবে না। অন্তর্ভুক্তি ও নিরাপদ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই রাজনীতির ভবিষ্যৎ।’