
ঢাকা, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মামলা পুনরুজ্জীবিত করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। প্রয়োজনে ট্রাইব্যুনালকে পুনঃতদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। সমাবেশের আয়োজন করে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল। বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. মু. শফিকুল ইসলাম মাসুদসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর নেতৃবৃন্দ।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “২৮ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বর্বর ও লোমহর্ষক ঘটনা। বিশ্বের বহু মানুষ এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “স্বাধীনতার ৪০ বছর পর রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় বিচার হতে পারে, তাহলে ২০ বছর আগে সংঘটিত এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের বিচার কেন হবে না?”
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আদেশ জারি করে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট দিতে হবে। যারা জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট চান, তারা জুলাই সনদকে অকার্যকর করতে চান। তাদের উদ্দেশ্য অসৎ এবং তারা গণভোট আয়োজন নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, “দিল্লি বসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নভেম্বরে বাংলাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ না করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।” তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, “নির্বাচনকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য থেকে রক্ষা করতে ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং সরকারের ভেতরে-বাইরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, “২৮ অক্টোবর দিনটি ‘পল্টন ট্র্যাজেডি’ হিসেবে পরিচিত। সেদিন জামায়াতের সমাবেশ শুরুর আগেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সন্ত্রাসীরা লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং পরে লাশের ওপর নৃত্য করে। এই দৃশ্য কোটি মানুষকে ব্যথিত করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ঘটনার পর শেখ হাসিনা, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুসহ ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা ও চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির ইশারায় অধিকতর তদন্তের কথা বলে সেই চার্জশিট সরিয়ে ফেলা হয় এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মামলা বাতিল করে দেয়।”
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার দাবি জানান এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পরিচালিত সকল গণহত্যার মামলার কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। শাপলা চত্বরে নিহতদের মতো ২৮ অক্টোবরের শহীদ পরিবারকেও রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহযোগিতা ও সম্মাননা দিতে হবে।”