গ্রামীণ নারী-শিশুর অপুষ্টি কমছে সবজি ও ছোট মাছে

বাসস
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:০৪
ছবি: কোলাজ বাসস

রংপুর, ৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : গ্রামে উৎপাদিত সবজি, দেশি ফল ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ছোট মাছ বেশি পরিমাণে খাওয়ায় রংপুরে শিশু, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের অপুষ্টির হার কমছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, গরীব গর্ভবতী নারী, স্তন্যদানকারী মা, কিশোর-কিশোরী ও শিশুদের স্থায়ী অন্ধত্ব, মাতৃত্বকালীন মৃত্যু, নবজাতক ও শিশু মৃত্যুর প্রধান কারণ অপুষ্টি।

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন সবজি, ফল এবং মলা, দারকিনা ও ঢেলার মত ছোট মাছ নিয়মিত খেলে এসব জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে। এতে করে অপুষ্টিজনিত রোগবালাই সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।

রংপুর বিভাগের প্রাক্তন স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েরা অপুষ্টিতে ভুগলে তা শিশুর মস্তিষ্ক, অঙ্গ ও প্রতিভার স্বাভাবিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটায়। এমনকি তা তাদের কঠিন রোগেও আক্রান্ত করতে পারে।

তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, পুষ্টির চাহিদা পূরণে স্থানীয় সবজি, ফল ও পুষ্টিগুণে ভরা ছোট মাছ নিয়মিত খাওয়া জরুরি।

তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, রংপুরের নারী ও শিশুদের মধ্যে সবজি, দেশীয় ফল ও ছোট মাছ খাওয়ার অভ্যাস বাড়ায় অপুষ্টির সমস্যা কমেছে।

স্থানীয় চিকিৎসক ডা. মফিজুল ইসলাম মন্টু বলেন, সুস্থ জাতি গঠনে বড় সমস্যা হলো গ্রামের গর্ভবতী নারী, স্তন্যদানকারী মা, নবজাতক ও শিশুদের অপুষ্টি। তবে সম্প্রতি সবজি, ফল ও স্থানীয় ছোট মাছ খাওয়ার প্রবণতা বাড়ায় পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নয়ন হচ্ছে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনোকলজি বিশেষজ্ঞ ডা. ইয়াসমিনা বলেন, সবজি, ফল ও ছোট মাছ খেলে নারীর নিরাপদ গর্ভকাল, সুস্থ নবজাতকের জন্ম এবং স্তন্যদানকারী নারীর দুধ উৎপাদন নিশ্চিত হয়।

রংপুর মেডিকেল কলেজের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, পুষ্টিগুণসম্পন্ন মাছ, ফল ও সবজি নিয়মিত খেলে শিশুদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এতে তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঠিকমত হয়। মলা, দারকিনা, ঢেলা মাছ এবং সবজি ও দেশীয় ফলগুলো লোহা ও ফলিক অ্যাসিডের মত প্রয়োজনীয় খনিজ ও ভিটামিন শরীরে সরবরাহ করে। এসব খনিজ ও ভিটামিন মস্তিষ্কের সুস্থ বিকাশ, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও শিশুদের প্রতিভা বিকাশে সাহায্য করে।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই খাদ্য তালিকায় ছোট মাছ রাখেন না। অথচ খনিজ, ভিটামিন ও দরকারি পুষ্টির অভাবে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। পুষ্টিগুণসম্পন্ন মাছ, সবজি ও ফল খেলে প্রসবজনিত, নবজাতক ও শিশুমৃত্যু হার কমে, স্থায়ী অন্ধত্ব দূর হয় এবং শরীর সুস্থ থাকে।

রংপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান তালুকদার বলেন, উত্তরাঞ্চলে জলাশয় কমলেও ছোট ছোট পুকুর, খাল, জলাভূমি ও ধানের জমিতে ছোট মাছের উৎপাদন বেড়েছে। তাই গ্রামের মানুষ পুষ্টিগুণে ভরপুর ছোট মাছ খেতে পারছে।

রংপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, গ্রামে সবজি ও ফলের উৎপাদন ও খাওয়ার অভ্যাস বাড়ায় তাদের পুষ্টি অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
খুলনায় কেসিসির পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত
বিনায় বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালার সমাপনী
বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বাগেরহাটে ছাত্রদলের আলোচনা সভা 
বিএমইউতে আন্তর্জাতিক রেডিওলজি দিবস ২০২৫ উদযাপিত
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে: শফিকুল আলম
শেরপুরে কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
মানিকগঞ্জে সিরাতুন্নবী (সা.) কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী
ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত 
অস্ট্রেলিয়ার কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে গেল বাংলাদেশ
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের তিন নেতাকর্মী গ্রেফতার
১০