বাসস
  ০৪ আগস্ট ২০২৩, ১৬:২১
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২৩, ১৭:৪৭

শেখ কামাল ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ

ঢাকা, ৪ আগস্ট ২০২৩ (বাসস) :  দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পাশাপাশি খেলাধুলার ক্ষেত্রে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করে তাকে ‘বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী’ বলে উল্লেখ করেছেন বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও সাবেক জাতীয় ফুটবলার হাসানুজ্জামান খান বাবলু।  বীর মুক্তিযোদ্ধা  শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী  কাল ৫ আগস্ট।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকীর প্রাক্কালে বাবলু বলেন, স্বাধীনতার পর তিনি (শেখ কামাল) দেশের ক্রীড়া ও সংস্কৃতিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। আজ তিনি বেঁচে থাকলে এসব ক্ষেত্রে  বাংলাদেশ আরও অনেক বেশি  উপকৃত হতো।
বার্তা সংস্থ্ াবাসসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে  শেখ কামালের ঘনিষ্ঠ ফুটবলারদের একজন বাবলু বলেন,‘ আমরা তাকে তার সেরা সময়টিতেই হারিয়েছি। তিনি সর্বকালের মহান একজন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ছিলেন ...। তার আধুনিক ধ্যান ধারনা ও পদ্ধতির মাধ্যমে বাংলাদেশ (ক্রীড়াঙ্গনে) অনেক উপকৃত হত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, কাপুরুষদের নিষ্ঠুরতায় তার ঘটনাবহুল জীবন থমকে গেছে।’
বাবলু বলেন, কামাল অত্যন্ত আবেগের সাথে খেলাধুলা উপভোগ করতেন এবং বাংলাদেশের খেলাধুলার উন্নয়নে সহায়তার জন্য সবসময় মুখিয়ে থাকতেন। তার লক্ষ্য ছিল পুরনো  ধারণা পাল্টে  বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের সূচনা করা। যেহেতু আমি ব্রাদার্স ইউনিয়নে খেলতাম, তাই  তিনি আমাকে তার প্রিয় আবাহনী ক্লাবে পরের ফুটবল মৌসুমে যোগদান করতে বলেছিলেন। আমিও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু বিপথগামী সেনা সদস্যদের হাতে হত্যার কারণে থমকে যায় তার মহান জাঁকজমকপূর্ণ ক্যারিয়ার।
রাজধানীর গোপীবাগ ভিত্তিক ক্লাব  ব্রাদার্স ইউনিয়নে খ্যাতি পাওয়া বাবলু বলেন,‘কামাল ভাই’ খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সমান প্রতিভার অধিকারী ছিলেন এবং খেলাধুলার মাধ্যমে ভাল নাগরিক হিসাবে গড়ে উঠতে দেশের যুবকদের আকৃষ্ট করেছিলেন।
সাবেক এই জাতীয় ফুটবলার বলেন,‘ দুঃখজনকভাবে তার (কামাল) উজ্জ্বল ক্যারিয়ারকে স্তব্ধ করে দেয়া হয়েছে। কারণ ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর সাথে খুন হন  তিনি। শেখ কামাল আজ বেঁচে থাকলে দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতেন।’
দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আজও কামাল ভাইয়ের শূন্যতা অনুভুত হয়। কারণ অসময়েই আমরা তাকে হারিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর সন্তান হয়েও তিনি (কামাল) অত্যন্ত সাদাসিধে জীবনযাপন করতেন বলে উল্লেখ করেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রাপ্ত সাবেক এই কৃতি ফুটবলার।
মালয়েশিয়ায় মেরদেকা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির জন্য জাতীয় ফুটবল দলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় খেলার মাঠস্থ  ক্যাম্প কামাল নিয়মিত পরিদর্শন করতেন বলেও জানান বাবলু। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে আমার জীবনে একটি স্মরণীয় ঘটনা ঘটেছিল। আমার এখনও সেই দিনটির কথা মনে আছে, যেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃ হল প্রতিযোগিতা চলাকালে কামাল ভাই, ফটো সেশনের জন্য জার্সি পরা একজন তরুণ ফুটবলার হিসাবে আমাকে তার পাশে বসতে ডেকেছিলেন। সেই সময় আমি সত্যিই আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছিলাম।
উপসংহারে সাবেক এই জাতীয় ফুটবলার বলেন,‘আমি কামাল ভাইকে গভীর স্মৃতি নিয়ে স্মরণ করছি এবং তার বিদেহী আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি।  তার অকাল মৃত্যুতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে যা কখনো পূরণ করা যাবে না।’