ঢাকা, ২ আগস্ট ২০২৫ (বাসস) : ২০ ক্লাব থেকে কমিয়ে ১৮টি ক্লাব নিয়ে প্রিমিয়ার লিগ আয়োজনের একটি প্রস্তাব নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ইংলিশ ফুটবলে আলোচনা চলছিল।
কিন্তু ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড মাস্টার্স জানিয়েছেন ব্যস্ত আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার নিয়ে বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সাথে উত্তেজনা বিরাজ করলেও আপাতত ক্লাবের সংখ্যা কমানোর কোন আগ্রহ তাদের নেই।
ইংলিশ শীর্ষ এই লিগের নতুন মৌসুম আগামী ১৫ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে। ১১ মাসের প্রতিদ্বন্দ্বীতার পর আগামী বছর ১৯ জুলাই যুক্তরাস্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালের ঠিক আগ মুহূর্তে লিগ শেষ হবে।
ক্লাব বিশ্বকাপে পিএসজিকে হারিয়ে চেলসির শিরোপা জয়ের তিন সপ্তাহ ও সামার সিরিজ ম্যাচের চূড়ান্ত রাউন্ডের দুই সপ্তাহ পর নতুন মৌসুম শুরু হচ্ছে।
গত বছর ম্যানচেস্টার সিটি মিডফিল্ডার রড্রি বলেছিলেন প্রতি বছরই ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় তার প্রতিবাদে খেলোয়াড়রা ধর্মঘটে যেতে পারে।
ইতোমধ্যেই ২০২৩-২৪ মৌসুম থেকে ফরাশি লিগ ওয়ান ২০ দলের পরিবর্তে ১৮ দলে নামিয়ে এনেছে।
কিন্তু বিবিসি স্পোর্টসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মাস্টার্স বলেছেন, ‘আমার মনে হয়না আমরা তেমন কোন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি। আমি খেলার বিকাশ এবং আমাদের ক্লাবগুলি যে উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারে তার পক্ষে - তবে ঘরোয়া ফুটবলের মূল্যে নয়।’
খেলোয়াড়দের পরিশ্রমের বিষয়টি নিয়ে ফিফা এবং প্লেয়ার্স ইউনিয়ন ফিফপ্রোর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছে।
মাস্টার্স ইউনিয়নের পক্ষ নিচ্ছে এই দাবিতে যে ফিফা ৩২ দলের ক্লাব বিশ্বকাপ বা আগামী গ্রীষ্মের বিশ্বকাপ বাস্তবায়নের বিষয়ে খেলার সাথে সঠিকভাবে পরামর্শ করেনি, যেখানে প্রথমবারের মতো ৪৮টি দেশ অন্তর্ভুক্ত হবে।
ক্যালেন্ডার সংকুচিত হওয়ার একমাত্র কারণ এটিই নয় - গত মৌসুমে উয়েফার তিনটি ক্লাব প্রতিযোগিতার সম্প্রসারণের মূল কারণ ছিল এফএ কাপের রিপ্লে বাতিল করা এবং কারাবাও কাপের তৃতীয় রাউন্ড এখন সেপ্টেম্বরের দুই সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হতে হবে।
কিন্তু মাস্টার্স জানিয়েছেন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অন্তত বড় লিগগুলোর ভূমিকা ছিল।
মাস্টার্স আরো বলেন, ‘জুরি বোর্ডের সদস্যরা প্রতিযোগিতামূলক ফরম্যাট, সময়সূচী এবং অন্তর্নিহিত অর্থনীতি সম্পর্কে দ্বিধাগ্রস্থ। কিন্তু ক্লাব বিশ্বকাপের সাফল্য বা মূল্যায়ন করা আমার কাজ নয়। এই নতুন প্রতিযোগিতাগুলি ঘরোয়া ক্যালেন্ডার এবং ঘরোয়া প্রতিযোগিতার উপর প্রভাব ফেলে কিনা তা মূল্যায়ন করা আমার কাজ, যার মধ্যে প্রিমিয়ার লীগ একটি। ১৯৯৪ সাল থেকে প্রিমিয়ার লীগ ৩৮০টি ম্যাচ, ২০টি ক্লাব নিয়ে গঠিত। আমরা একেবারেই এর আকার পরিবর্তন করিনি।’
‘এখন আমরা ইউরোপীয় এবং বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণের কারনে আমাদের ঘরোয়া ক্যালেন্ডারটি নতুন করে ডিজাইন করতে শুরু করছি। আমরা খেলোয়াড়দের আরও বেশি ম্যাচ খেলতে বলছি। খেলার শুরুতে ফিফা এবং সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে এই বিষয়গুলি কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায় সে সম্পর্কে একটি সঠিক সংলাপ হওয়া উচিত।
"দুঃখজনকভাবে এটি অনুপস্থিত।’
১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে প্রিমিয়ার লীগ ২২ থেকে ২০-এ নামিয়ে আনার পর থেকে প্রিমিয়ার লীগ একই রয়ে গেছে, অতীতে তারা ক্লাবগুলিকে এমন সময়সূচীতে বাধ্য করতে চেয়েছিল যা কার্যত ক্লাবগুরো চায় না।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রিমিয়ার লীগ ইউরোপে বুধবার রাতে ক্লাবগুলিকে এ্যাওয়ে ম্যাচে খেলা বন্ধ করে দিয়েছে এবং তারপর শনিবার দুপুরের খাবারের সময় আবার খেলতে বাধ্য করেছে এবং বড়দিনের সময়ে ম্যাচগুলির মধ্যে আরও দূরত্ব তৈরি করেছে।
সর্বশেষ ইস্যুটি চেলসি এবং সিটিকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে, যারা গ্রীষ্মকালীন ব্যস্ততার কারণে নতুন মৌসুম দেরিতে শুরু করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের এই প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। এর অর্থ হচ্ছে পিএসজিকে মেটলাইফ স্টেডিয়ামে হারানোর ঠিক পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে চেলসিকে মাঠে নামতে হচ্ছে।