
ঢাকা, ২৩ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস) : দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ২১৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ২-০ ব্যবধানে দুই ম্যাচের সিরিজ জিতেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। জয়টা সহজে আসলেও, টেস্টের পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডের সাথে লড়াই করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্তর মতে, পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত ম্যাচ গড়িয়েছে। ম্যাচ জয়ের জন্য লড়াই করতে হয়েছে, এটাই টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য্য।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জয়ের জন্য চতুর্থ দিন আয়ারল্যান্ডকে ৫০৯ রানের বড় টার্গেট ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। এরপর ১৭৬ রানের মধ্যে আয়ারল্যান্ডের ৬ উইকেট শিকার করে নেয় বাংলাদেশ। তাই চতুর্থ দিন শেষে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল টাইগাররা।
ধারনা করা হয়েছিল, পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনেই শেষ হয়ে যাবে দ্বিতীয় টেস্ট। কিন্তু সপ্তম থেকে নবম উইকেট জুটিতে দুর্দান্তভাবে বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্ফার, এন্ড্রি ম্যাকব্রিন, জর্ডান নিল ও গ্যাভিন হোয়ে। এই চারজন মিলে তিন উইকেট জুটিতে ৩৮১ বল খেলে ১২৮ রান যোগ করেন। এতে ম্যাচ গড়ায় পঞ্চম দিনের দ্বিতীয় সেশনে। শেষ পর্যন্ত ১১৩.৩ ওভারে ২৯১ রানে আয়ারল্যান্ডকে গুড়িয়ে দিয়ে ম্যাচ ও সিরিজ জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
পঞ্চম দিনে ব্যাট-বলের লড়াইকে টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য বলে মনে করেন শান্ত। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, ‘এটাই টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য, আমার মনে হয় ছোট বা বড় দল বলে আসলে কিছু নাই। তারা খুব ভাল ক্রিকেট খেলেছে, এটা মানতেই হবে। পঞ্চম দিনের উইকেটে এসে যেভাবে তারা আমাদের চ্যালেঞ্জ দিয়েছে, অবশ্যই তাদেরকে কৃতিত্ব দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভাল লাগছে। অবশ্যই ভাল লাগছে। আশা করিনি। সত্যি বলতে আমরাও আশা করিনি।
কিন্তু পাঁচ দিন গিয়েছে। কষ্ট করে এই ইনিংসে দশ উইকেট নিতে হয়েছে। এটাই আসলে টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য্য এবং আমরা সবাই এই টেস্টটি অনেক বেশি উপভোগ করেছি।’
নিজ দলের বোলারদের প্রশংসা করেছেন শান্ত, ‘পাশাপাশি আমি বলব যে, আমাদের বোলাররা যেভাবে ধৈর্য্য নিয়ে বল করেছে, এটাও ক্রেডিট দেওয়ার মত। বিশেষভাবে তাইজুল, মিরাজ, মুরাদ, খালেদ এবং এবাদত, সবাই যেভাবে দায়িত্ব নিয়ে বোলিং করেছে এটা আসলে ক্রেডিট দেওয়ার মতই।’
সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জয়ের পরও ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরেছেন শান্ত। ব্যাটারদের পারফরমেন্স নিয়ে শান্ত বলেন, ‘এই সিরিজ শুরুর আগে আমরা টিম মিটিংয়ে কথা বলেছি যে, আমরা এই সিরিজে ব্যক্তিগতভাবে কতগুলো সেঞ্চুরি বা হাফ-সেঞ্চুরি করতে পারব। তাই পজিটিভ দিক হচ্ছে, এই সিরিজে চারটা সেঞ্চুরি হয়েছে। যদি নেগেটিভ দিক নিয়ে বলতে হয় তাহলে সেঞ্চুরিগুলো আরও বড় হতে পারত। ১৫০ বা ২০০ হতে পারত। ৫০ রান গুলো ১০০ হতে পারতো। যদি অধিনায়ক হিসেবে বলেন, তাহলে আমি বলব যে ইনিংস আরও বড় হলে আমার ভাল লাগতো। আমি আশা করব ভবিষ্যতে যেন ব্যাটাররা ৫০ রানকে ১শ, ১শ রানকে দেড়শ বা ২শ করতে পারবে।’
এই সিরিজে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হয়েছেন বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। এমনকি প্রথম বাংলাদেশী বোলার হিসেবে টেস্টে ২৫০ উইকেট শিকারের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন তিনি। তাইজুলের প্রশংসা করতে ভুল করেননি শান্ত। তিনি বলেন, ‘তাইজুল ভাই যেভাবে এত বছর ধরে খেলে আসছে, তাই তাকে নিয়ে দ্বিধা নেই। অফ ফিল্ড, অন ফিল্ডে সবসময় কঠোর পরিশ্রম করছে সে।
মুশফিক ভাই, তাইজুল অনেক বড় বড় অর্জন করছে এবং সামনে হয়ত আরও করবে। এটা যত বেশি হাইলাইট হবে তত দলের জন্য ভালো হবে।’