৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে গিয়ে গুলিতে শহীদ হন শাহাদাত

বাসস
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৯:৩৩
শহীদ শাহদাত হোসেন। ছবি : বাসস

প্রতিবেদন : জাহিদুল খান সৌরভ

শেরপুর, ১৬ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ২০২৪ স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে যখন ঢাকার রাজপথে ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে যোগ দিয়ে বিকেল ৩টায় মিরপুর-২ মডেল থানার সামনের সড়কে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান গার্মেন্টস কর্মী শাহদাত হোসেন (২৮)।

শহীদ শাহদাত হোসেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার শালচুড়ার রাংটিয়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলী (৬০) ও সুরুতা বেগমের (৫০) ছেলে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে শাহাদাত ছিলেন দ্বিতীয়। বিবাহিত শাহাদাতের ঘরে রয়েছে তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান। গার্মেন্টসে কাজ করে পরিবারকে সচ্ছল করার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। কিন্তু পুলিশের বুলেট তার সেই স্বপ্ন ছিনিয়ে নেয়।

শাহাদাতের মা সুরুতা বেগম (৫০) বলেন, পোলাডা বাঁইচা থাকতে আমাকে প্রতি মাসে টাকা পাঠাইতো। সেই টাকায় আমি সংসার চালাইতাম। পোলাডারে হারাইয়া আমি এখন পথের ফকিরের মতো হইয়া গেছি। এখনো আমার ছেলে হত্যার বিচার পাই নাই। যারা ওরে মাইরা ফেলছে, আমি তাদের বিচার চাই। এহন আমার একটাই ইচ্ছা। যেন মরার আগে ন্যায়বিচার দেখে মরতে পারি। এভাবে যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।

তিনি বলেন, আমার ছেলে শাহাদাত বিয়ের পর বড় একটি সড়ক দুর্ঘটনার স্বীকার হয়। নিজের কিছু জমানো টাকা-পযসা আর মানুষের কাছ থেকে সাহায্যে সহযোগিতা নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করিয়েছি। তখন শাহাদাতের বউ আমার অসুস্থ ছেলেকে রেখে বাপের বাড়ি চলে যায়। যেদিন আমার পোলা ঢাকায় পুলিশের গুলিতে মারা যায়। সেদিন শুধু তার লাশ দেখতে এসেছিল শাহাদাতের বউ। এরপর সরকারি-বেসরকারি যতো অনুদান আসে, সব শাহাদাতের বউ নিয়ে যায়। আমাকে সে কিছুই দেয়নি।

শাহাদাতের বোন রিমা খাতুন (২৮) বলেন, আমিও ঢাকাতে থাকতাম। শাহাদাত ভাই গার্মেন্টসে চাকরি করত। আমাদের বাসা আর ভাইয়ের বাসা কাছাকাছি ছিল। ৫ আগস্ট বিকালে মোবাইলে খবর পাই ভাইকে পুলিশ গুলি করছে। পরে হাসপাতালে গিয়ে দেখি ভাই আর বেঁচে নেই। আজও ভাই হত্যার কোনো বিচার হয় নাই। তাই আমাদের দাবি এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত হোক, বিচার হোক। যারা আমার ভাইকে বিনা অপরাধে হত্যা করেছে, তারা যেন দ্রুত শাস্তি পায়। 

শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও শ্রীবরদি-ঝিনাইগাতী আসনের সাবেক এমপি মো. মাহমুদুল হক রুবেল জানান, ‘আমরা জেলা বিএনপি ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শহীদ শাহাদাতের বাড়ি গিয়েছিলাম। তার কবর জিয়ারত করে শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়ে এসেছি। এ ছাড়া শহীদ শাহাদাতের মায়ের কাছে বিএনপির পক্ষ হতে আর্থিক সহযেগিতাও পৌছে দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
৭ ইলেভেন অধিগ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাহার করল কাউচ টার্ড
সিরিয়ায় ইসরাইলের ‘লাগামহীন আগ্রাসন’র নিন্দা জানালেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আনসার একাডেমিতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন 
কমলগঞ্জে ময়ুর মিয়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন: আলামতসহ মূল আসামি গ্রেফতার
নারায়ণগঞ্জে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণে অভিযান: বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা
ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন আটকানো যাবে না : মীর সরফত আলী সপু
নতুন প্রেরণা: বগুড়া শিবগঞ্জে ১১০টি ভোটকেন্দ্র কমিটিতে বিএনপির ১৭ হাজার সদস্য
গোপালগঞ্জে এনসিপি’র কর্মসূচিতে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি শামা ওবায়েদের
নীলফামারী জেলা বিএনপি’র নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠিত
তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে নেত্রকোণার বারহাট্টায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল
১০