ঢাকা, ২ মার্চ, ২০২৫ (বাসস): আজ রমজানের প্রথম দিনে নগরীর ইফতার বাজারে রোজাদারদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ইফতারের জন্য নগরবাসীদের রাস্তার পাশের দোকান ও অভিজাত পাঁচ তারকা হোটেল থেকে তাদের পছন্দের বিভিন্ন খাবার জনিসপত্র কিনতে দেখা গেছে।
জোহরের নামাজের পরপরই, পুরান ঢাকার চক সার্কুলার রোডের চকবাজার ইফতার বাজার রোজাদার মুসলি¬দের জনাকীর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়।
পবিত্র রমজান মাসের প্রথম ইফতারের জন্য শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে রোজাদাররা বিভিন্ন ধরণের সুস্বাদু খাবার কিনতে অস্থায়ী এসব স্টলে এসে ভিড় জমান।
বাজারে ঐতিহ্যবাহী খাবার যেমন ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনি, নিমকি, ঘুগনি, ডিমের চপ, হালিম, বিভিন্ন ধরণের নান, বড় বাপের পোলায় খায়, শাহী পরোটা, বিভিন্ন ধরণের কাবাব, বিভিন্ন ধরনের জিলাপি, শরবত আইটেম, মিষ্টিদ্রব্য বিক্রি হচ্ছিল।
সুন্দর করে সাজানো ও সুবাশিত ইফতারের পণ্য কিনতে আকৃষ্ট গ্রাহকরা দামের দাম নিয়ে কিছুটা অসন্তুষ্ট বলে মনে হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় বেশি বলে জানা গেছে।
বাসসের সাথে কথা বলার সময়, রামপুরা থেকে চকবাজারে আসা তানভীর আহমেদ বলেন, পুরান ঢাকার ইফতারের একটা আলাদা আকর্ষণ আছে এবং সেই কারণেই তিনি রমজানের প্রথম দিনে ইফতারের জিনিসপত্র কিনতে এখানে এসেছেন।
তিনি আরও বলেন, "এখানকার কাবাবের স্বাদ শহরের অন্য যেকোনো এলাকার চেয়ে আলাদা।"
মতিঝিল এলাকার বাসিন্দা মো. রাশেদ বলেন, "আমরা বাড়িতে ইফতারের আয়োজন করলেও বাইরে থেকে খাবার কিনে খাবার খাওয়া এখন রীতিতে পরিণত হয়েছে।
আমরা আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে যতটা সম্ভব খাবার দিয়ে টেবিল ভরে রাখার চেষ্টা করি।"
রাশেদ বলেন, তবে এই বছর ইফতারের জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি।
রেস্তোরাঁ পাড়া নামে পরিচিত খিলগাঁও ভোজনরসিকদের জন্য একটি প্রিয় জায়গা।
পবিত্র রমজান মাসের শুরুতে, খিলগাঁওয়ের পলি¬মা সংসদ থেকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার তালতলা বাজার পর্যন্ত ইফতার বাজারে মানুষের ভিড় থাকে।
এই এলাকার রাস্তার পাশের দোকান ও রেস্তোরাঁগুলিতে সাধারণত সারা বছরই ভালো ভিড় হয়। কিন্তু রোজার মাসে, লোকেরা ইফতার বাজারে ভিড় করে কারণ রেস্তোরাঁ মালিকরা বিভিন্ন সুস্বাদু খাবারের ব্যবস্থা করে বিভিন্ন ছাড় দেয়।
ছাদের রেস্তোরাঁগুলিও ভিন্ন আয়োজনে ইফতারের জিনিসপত্র বিক্রি করার পাশাপাশি বুফে প্যাকেজও অফার করছে। ৪০-৫০টি আইটেমের প্যাকেজ ৬০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়। ইফতারের বুফেতে ভাজা ভাত থেকে শুরু করে মিষ্টি পর্যন্ত সবকিছুই রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খালিদ বলেন, “আজ আমরা এখানে ইফতারের জন্য জড়ো হয়েছি। এই এলাকার রেস্তোরাঁগুলি বেশ ভালো। তাদের ইফতারের আইটেমগুলো সাশ্রয়ী। তাই, আমরা সবাই এখানে আসি।”
ইফতারের সময় রেস্তোরাঁগুলির ভেতরে মানুষের ভিড় দেখা যায়। তাছাড়া, ক্রেতারা তাদের বাড়ির জন্য ইফতারের নানা আইটেম কিনতে রাস্তার ধারের অস্থায়ী দোকানগুলোতে ভিড় করেন।
অনেকেই ঘরোয়া খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের স্বাদ পেতে বিভিন্ন ধরণের ইফতারের আইটেম কিনছেন। একজন ক্রেতা বললেন, "আজ পহেলা রমজানে আমি বাড়িতেই ইফতার করবো এবং এখান থেকে কিছু হালিম, মুরগির চপ এবং জিলাপি কিনবো।"
খিলগাঁও ইফতার মার্কেটে নানা আইটেমের মধ্যে খাসির কাচ্চি, তন্দুরি চিকেন, ফিরনি, কিমা পরোটা, বিফ তেহারি, চিকেন রোস্ট, চিকেন বিরিয়ানি, মোরোগ রোস্ট, বিফ চ্যাপ, বিফ রোস্ট, খাসির রোস্ট, বিফ বটি, চিকেন ফ্রাই, বোরহানি, জর্দা, চিকেন ললিপপ, জালি কাবাব, ড্রামস্টিক, টিকা কাবাব, বোম্বে জিলাপি, রেশমি জিলাপি, বুন্দিয়া, লুচি পরোটা, লাচ্ছা, পরোটা, নান রুটি, গরুর মাংসের রেজালা, খাসির রেজালা ছাড়াও পেঁয়াজ, বেগুন ও আলুর চপ ইত্যাদি পাওয়া যায়।
খিলগাঁও ও চকবাজারের মতো নগরীর অন্যান্য এলাকাতেও ইফতার কেনার জন্য ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।