মার্কিন বাজেট ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ায় ওয়াল স্ট্রিটে বিক্রির প্রভাব পড়েছে এশিয়ার শেয়ারবাজারেও

বাসস
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৫, ১৩:০৮

ঢাকা, ২২ মে, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে আশঙ্কা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন কর ছাড় পরিকল্পনার ফলে বিপুল ঘাটতি আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কায় ওয়াল স্ট্রিটে বড় ধস নামে, যার প্রভাব এশিয়ার শেয়ারবাজারে পড়ে এবং ট্রেজারি বন্ডগুলোর ওপর চাপ অব্যাহত থাকে।

হংকং থেকে এএফপি জানিয়েছে যে, মুডি'স যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং কমানোর কয়েকদিন পর ২০ বছরের মেয়াদী মার্কিন সরকারি বন্ড বিক্রির ফল খারাপ হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মার্কিন সরকারের আর্থিক অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ বেড়ে যায়। 

চীন-মার্কিন শুল্ক বিরতির কারণে পুজিবাজার উত্থান বেড়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ের মার্কেটর ঊর্ধ্বগতি থেমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মাঝে আবারও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

বিনিয়োগকারীরা সরকারি বন্ড কিনতে এখন বেশি সুদ দাবি করছে। যার মানে তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী নয়। ৩০ বছরের মেয়াদী বন্ডের সুদহার ২০২৩ সালের শেষ দিকের পর এখন সবচেয়ে বেশি।

এই বিক্রি (শেয়ার ও বন্ডের দাম পতন) শুরু হয় ২০ বছরের মেয়াদি মার্কিন সরকারি বন্ডের নিলামে কম আগ্রহ দেখা যাওয়ার পর। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবার সেই ঘটনার কথা মনে পড়ে যায়, যখন গত মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প "লিবারেশন ডে" নামে বড় ধরনের শুল্ক (ট্যারিফ) আরোপ করেছিলেন, যার পর বাজারে ধস নামে। এরপর হোয়াইট হাউস কিছুটা নমনীয় অবস্থানে ফিরলেও বাজারে আতঙ্ক থেকে যায়।

ওয়াল স্ট্রিটের তিনটি প্রধান সূচকই বড় পতনে শেষ হয়েছে। কংগ্রেসে একটি নতুন কর ছাড়ের বিল পাশ করানোর চেষ্টা করছেন ট্রাম্প। যেখানে তার প্রথম মেয়াদের কর ছাড় বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। এই খরচ মেটাতে সরকারি খরচ কমানোর পরিকল্পনাও আছে। কিন্তু বাজারের বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই খরচ কমানো যথেষ্ট হবে না। ফলে, বাজেট ঘাটতি আরও বাড়বে।

ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংকের টাপাস স্ট্রিকল্যান্ড বলেন, এই নতুন করছাড় পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। আর বন্ড বাজারে তার স্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।’
ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের অর্থমন্ত্রী স্টিভেন এমনুচিনও বলেন, ‘বাণিজ্য ঘাটতির চেয়ে বাজেট ঘাটতি এখন বড় চিন্তার বিষয়।’

এশিয়ার বড় বড় বাজার টোকিও, হংকং, সাংহাই, সিডনি, সিউল, তাইপেই, ওয়েলিংটন ও ম্যানিলা—সব জায়গাতেই শেয়ারবাজার নিম্নমুখী হয়েছে।

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে মার্কিন ডলারের মানও কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত সোনার দাম বেড়ে প্রতি আউন্সে প্রায় ৩,৩৪০ ডলারে পৌঁছেছে। শেয়ারবাজারে আরও ধসের আশঙ্কা রয়েছে। এসপিআই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের স্টিফেন ইনেস বলেন, দীর্ঘা মেয়াদী বন্ডে উচ্চ সুদের কারণে এখনকার উচ্চ শেয়ারমূল্যগুলো টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তি এবং দ্রুত বেড়ে ওঠা কোম্পানিগুলো এখন বড় ধরণের মূল্য সংশোধনের মুখে।

তবে ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেট থেকে ভালো খবর এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা ‘স্টেবলকয়েন’ (যার মান ডলারের সঙ্গে যুক্ত) নিয়ন্ত্রণে একটি আইন নিয়ে একমত হওয়ায় বিটকয়েন নতুন রেকর্ড গড়ে ১,১০,৭০৭ ডলারে পৌঁছেছে। এর ফলে এই খাতে ভবিষ্যতে নিয়ম-কানুন পরিষ্কার হবে বলে আশা তৈরি হয়েছে।

তেলের বাজারেও দরপতন হয়েছে। কারণ, ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের তেল মজুত গত সপ্তাহে বেড়ে গেছে। এর ফলে বুধবারের মূল্যবৃদ্ধি (যা ইসরায়েলের ইরান হামলার পরিকল্পনার খবরে হয়েছিল) এখন উল্টে গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
পাকিস্তান-ভারত সংঘাতের ধ্বংসস্তূপে অবিস্ফোরিত গোলাবারুদের খোঁজ চলছে
মারিউপোল অবরোধের সেনাপতি মর্দভিচেভকে রাশিয়ার স্থলবাহিনীর প্রধান নিয়োগ
শেষ মুহূর্তে চাগোস দ্বীপপুঞ্জ চুক্তি পর্যালোচনার নির্দেশ যুক্তরাজ্যের আদালতের
ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক মামুন খালেদসহ ৪ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসিসহ ১৪৮ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলা
পঞ্চগড় ও কুমিল্লা সীমান্তে ৩৪ জনকে পুশ-ইন করেছে ভারত
পাকিস্তানের ৫০ শতাংশ ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি চায়
গাজীপুরের শ্রীপুরে চায়না-৩ জাতের লিচুর ফলনে চাষিদের মুখে হাসি
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করায় ডিএমপিতে ১,৯১১টি মামলা
লক্ষ্মীপুরে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে এক যুবক নিহত
১০