
ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বাংলা একাডেমিতে চলছে বিজয় বইমেলা। প্রথমবারের মতো এই বইমেলা আয়োজন করছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি (বাপুস)।
আজ বৃহস্পতিবার বিজয় বইমেলার দ্বিতীয় দিন পাঠকদের ভিড়ে সরগরম হয়ে ওঠে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। বিজয় বইমেলায় আগত দর্শনার্থী ও পাঠকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে লেখা বইপত্র।
মেলা প্রাঙ্গণ সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শহরের নানা প্রান্ত থেকে দুপুর আড়াইটা থেকেই দর্শনার্থী ও পাঠকেরা এসে জড়ো হচ্ছেন। প্রতিটি প্রকাশনীর স্টলেই পাঠকদের আনাগোনা দেখা যায়। কেউ বইপত্র উল্টিয়ে মলাট দেখছেন, আবার কেউবা দাঁড়িয়ে একঝলক পড়েও নিচ্ছেন সূচিপত্র।
মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারিহা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিজয় বইমেলা বাপুসের একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এই বইমেলা আমাদেরকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা মনে করিয়ে দেয়। মনে করিয়ে দেয় পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদের সশস্ত্র সংগ্রামের কথা।
ফারিহা মনে করেন, বিজয় বইমেলা প্রতিবছর আয়োজন করা উচিত। কেননা এতে করে মানুষ বিজয় মাসে স্বাধীনতার ইতিহাস ও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে পড়তে আরও বেশি আগ্রহী হবে। তিনি আরও বলেন, এ মেলা থেকে আমি মুক্তিযুদ্ধ, জুলাই অভ্যুত্থান ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে লেখা বইপত্র দেখছি। এসব আন্দোলনের ইতিহাসই আমাদের আগামী দিনের চালিকাশক্তি।
রাজধানীর বনশ্রী থেকে এসেছেন সালমা পলি। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের একটি স্বাধীন ভূখণ্ড দিয়েছে। দেশের মানুষের প্রয়োজনে এ দেশে গণঅভ্যুত্থানও হয়েছে।
সেসব ইতিহাস আমাদের জানা গুরুত্বপূর্ণ। বিজয় মাসকে কেন্দ্র করে আয়োজিত এই মেলায় তিনি দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে লেখা বইপত্র কিনবেন বলে জানান।
মেলার দ্বিতীয় দিনে ‘মুনীর চৌধুরী শতবার্ষিক পাঠ’ শীর্ষক বই নিয়ে বিজয় মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বইটি নিয়ে আলোচনা করেন ড. মাসরুর ইমতিয়াজ ও শাহমান মৈশান।
শাহমান মৈশান তার আলোচনায় বলেন, এই বইতে মুনীর চৌধুরীকে দেখার একটি পদ্ধতি আমরা পেতে পারি। এই বইয়ের সূত্রে মুনীর চৌধুরীকে আমরা নতুনভাবে দেখতে পারি। বইটির মাধ্যমে বোঝা যায় মুনীর চৌধুরী আজও আমাদের মাঝে প্রাসঙ্গিক, পাঠকের মধ্যে তিনি এখনো জীবিত আছেন। তাঁকে দেখার একটি উপলক্ষ তৈরি করে দিয়েছে এই বইটি।
মাসরুর ইমতিয়াজ বলেন, মুনীর চৌধুরী যে আজও আমাদের মাঝে প্রাসঙ্গিক, সে বিষয়টিই এই বইতে আলোকপাত করা হয়েছে।
বিজয় বইমেলা চলবে আগামী ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন দুপুর আড়াইটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। তবে ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে মেলা শুরু হবে।