ঢাকা, ২১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : ম্যাক্স গ্রুপ ৩৪তম জাতীয় সাঁতার, ডাইভিং ও ওয়াটার পোলো প্রতিযোগিতায় আলো ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাঁতারু সামিউল ইসলাম রাফি। মিরপুরের জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্সের নীল জলে নেমে একের পর এক নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন তিনি। প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনেই চারটি নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন রাফি।
এর আগে গতকাল একটি ব্যক্তিগত ও একটি দলীয় ইভেন্টে জাতীয় রেকর্ড গড়েছিলেন এই তরুণ সাঁতারু।
দ্বিতীয় দিন শেষে পদক তালিকায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী ২০টি স্বর্ণ, ১৩টি রৌপ্য ও ৭টি ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৫টি স্বর্ণ, ১১টি রৌপ্য ও ১৭টি ব্রোঞ্জ নিয়ে দ্বিতীয় এবং বিকেএসপি ২টি স্বর্ণ, ৩টি রৌপ্য এবং ৩টি ব্রোঞ্জ পদক জিতে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
আজ রাফির প্রথম রেকর্ডটি আসে ২০০ মিটার ইন্ডিভিজুয়াল মিডলেতে। তিনি গত বছর নিজের করা রেকর্ডটি ভেঙে এবার সময় নিয়েছেন ২ মিনিট ৮.৯২ সেকেন্ড, যা তার আগের ২ মিনিট ৯.৯৯ সেকেন্ডের চেয়েও দ্রুত। এরপর ৫০ মিটার বাটারফ্লাই ইভেন্টে তিনি ২৫.১৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েন, যা ২০২২ সালে মাহামুদুন্নবী নাহিদের গড়া রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
সামিউল ইসলাম রাফির দিনের তৃতীয় রেকর্ড ছিল ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইলে। এই ইভেন্টে রাফি ৫২.৪২ সেকেন্ড সময় নিয়ে ১২ বছর আগে করা মাহফিজুর রহমানের রেকর্ড (৫২.৮৮ সেকেন্ড) ভাঙেন। দিনের চতুর্থ ও শেষ রেকর্ডটি আসে ২০০ মিটার ব্যাক স্ট্রোকে। এখানেও তিনি গত বছর নিজের করা রেকর্ড ভেঙে ২ মিনিট ১০.৪৬ সেকেন্ড সময় নেন। তার আগের রেকর্ডেও সময় ছিল ২ মিনিট ১০.৮৭ সেকেন্ড।
গত দুই বছর থাইল্যান্ডে স্কলারশিপ নিয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ পেয়েছেন রাফি। এছাড়া নতুন মিশরীয় কোচের অধীনে সাঁতারুরা অনেক কিছুই শিখতে পারছেন। রাফি মনে করেন, এর ফলে এবার অনেক নতুন জাতীয় রেকর্ড হচ্ছে। নিজের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট এই সাঁতারু ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছেন।
এত রেকর্ডের মাঝেও হ্যান্ড টাইমিংংে সব রেকর্ড হওয়ায় দুঃখ রয়ে গেছে রাফির। তিনি জানান, 'ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড দিয়ে যে শুধু সঠিক টাইম নির্ণয় করা হয় এমনটি নয়। বিদেশে এখন আর কেউ হ্যান্ড টাইম গ্রহণ করে না। ইলেকট্রনিক টাইমই সেখানে গ্রহণযোগ্য। আমাদের অনেক স্কলারশিপ থাকে। আমি নিজেও স্কলারশিপের মধ্যে আছি। কিন্তু আমাদের টাইমিং ইলেকট্রনিক না হওয়াার কারনে লারশিপের সেই সুযোগগুলো হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।'
রাফির চারটি ছাড়াাও আজ আরও তিনটি ইভেন্টে নতুন জাতীয় রেকর্ড হয়েছে। সেনাবাহিনীর রোমানা আক্তার একাই দুটি রেকর্ড করেছেন - ২০০ মিটার ইন্ডিভিজুয়াল মিডলেতে ও ২০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে। এছাড়া ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে নৌবাহিনীর যুথী আক্তার নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন।
২০০ মিটার ইন্ডিভিজুয়াল মিডলেতে রোমানা ২ মিনিট ৩৬.০২ সেকেন্ড সময় নিয়ে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন। আগের রেকর্ডটি ছিল ২০১৯ সালে জুনাইনা আক্তারের করা ২ মিনিট ৩৯.০১ সেকেন্ডে। এই ইভেন্টে বিকেএসপির জুঁই আক্তার ২ মিনিট ৪১.৬৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্বিতীয় ও নৌবাহিনীর যুথী আক্তার ২ মিনিট ৪২.১৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে তৃতীয় স্থান লাভ করেছেন।
২০০ মিটান ব্রেস্টস্ট্রোকে ২ মিনিট ৪৯.৭৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে নতুন জাতীয় রেকর্ড গড়েছেন রোমানা। এই ইভেন্টে ২০১৪ সালে ২ মিনিট ৫১.৩৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে আগের রেকর্ডটি করেছিলেন রোমানা নিজেই। ২ মিনিট ৫১.২৪ সেকেন্ড সময় নিয়ে নৌবাহিনি মুক্তার খাতুন ২য় ও ৩ মিনিট ৫.৭৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে সেনাবাহিনীর মুক্তি খাতুন হয়েছেন তৃতীয়।
২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকে নৌবাহিনীর যুথী আক্তার ২০২২ সালে করা নিজের রেকর্ডটি ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড করেছেন। নতুন রেকর্ড গড়তে তিনি সময় নিয়েছেন ২ মিনিট ৪০.৪১ সেকেন্ড। এই ইভেন্টে নৌবাহীনির রুপা খাতুন ২ মিনিট ৪৬.০৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে দ্বিতীয় ও সেনাবাহিনীর মোছা: সুমাইয়া আক্তার ২ মিনিট ৫৮.০৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে তৃতীয় স্থান লাভ করেছেন।