ঢাকা, ১৯ মে, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ)-এ চক্রাকারে মাথাঘোরা বা ভারসাম্য হারানো অনুভবজনিত সমস্যা, ভার্টিগো নিয়ে “এপ্রোস টু ভার্টিগো” শীর্ষক ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক অডিটোরিয়ামে বিএমইউ’র সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটির উদ্যোগে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বিশেষজ্ঞগণ জানান, ইনার ইয়ারজনিত সমস্যা, ভেস্টিবুলার সিস্টেম বা স্নায়বিক সমস্যা, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, ব্রেইনের সমস্যা ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে ভার্টিগো হতে পারে। তাই সর্বাগ্রে যে কারণে ভার্টিগো, তা চিহ্নিত করতে হবে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা দিতে হবে। অর্থাৎ, আগে ভার্টিগোর চিকিৎসা নয়। যে কারণে ভার্টিগো হয়েছে, তার চিকিৎসা দেওয়ার ওপর বিশেষজ্ঞগণ গুরুত্ব আরোপ করেন।
সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটির চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছার সভাপতিত্বে ও ডা. খালেদ মাহবুব মোর্শেদের (মামুন) সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সেন্ট্রাল সেমিনারে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার ও শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সেন্ট্রাল সেমিনারে নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস কে মাহবুব আলম স্নায়বিক সমস্যাসহ ওষুধের মাধ্যমে ভার্টিগোর চিকিৎসা এবং নাক, কান ও গলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কানু লাল সাহা ভার্টিগোর কানের অভ্যন্তরীণ সমস্যাসহ সার্জিক্যাল চিকিৎসা বিষয়ে আলোকপাত করে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, এ ধরনের সেন্ট্রাল সেমিনার ভার্টিগো রোগ নির্ণয় ও উন্নত চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার বলেন, ভার্টিগো রোগটি প্রধানত নিউরোলজি এবং নাক, কান বিশেষজ্ঞগণের বিষয়। আজকের সেন্ট্রাল সেমিনার এপ্রোস টু ভার্টিগো এই রোগের চিকিৎসার সর্বশেষ অগ্রগতি ও সঠিক ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় জ্ঞান বিতরণে অবদান রাখবে।
সেমিনারে জানানো হয়, ভার্টিগো একটি মাথা ঘোরাজনিত কমন রোগ। বিভিন্ন কারণে এটা হয়ে থাকে। ভার্টিগো হলে রোগীর মনে হয়, তার চারদিক ঘুরছে। অনেক সময় রোগী নিজেও ঘুরতে পারেন। রোগী পড়ে যেতে পারে, তার হাঁটতে সমস্যা হয়।
সাধারণত শরীরে ভারসাম্যহীন অবস্থার সৃষ্টি, কানের অসুখ, ব্রেইনের সমস্যা, কান ও ব্রেইনের সংযোগ স্থলে সমস্যা, চোখের সমস্যা, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড, হৃদ্রোগ ও উচ্চ রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে ভার্টিগো হয়ে থাকে।
ভার্টিগো রোগ নির্ণয়ে রোগীর ইতিহাস নেওয়া ও ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার মাধ্যমে করা সম্ভব। ভার্টিগো চিকিৎসার ক্ষেত্রে কেন ভার্টিগো হয়েছে, তা নির্ণয় করে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন।
ভার্টিগো চিকিৎসায় ব্যায়াম, রিহ্যাবিলিটেশন থেরাপি, ফিজিওথেরাপি, ক্ষেত্র বিশেষে কানের অপারেশন ও ব্রেইনের স্ট্রোক হলে তার চিকিৎসা ইত্যাদির প্রয়োজন হয়।
অনেক সময় এমন কিছু ব্যায়াম রয়েছে, যা চিকিৎসকের কাছ থেকে শিখে নিয়ে চর্চা করলে রোগী দ্রুত আরোগ্যলাভ করে।