ঢাকা, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): যুক্তরাষ্ট্রে ২০২২ সালে অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের আনুমানিক হার বেড়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) কর্তৃক প্রকাশিত একটি নতুন গবেষণা। গবেষকরা বলছেন, এই বৃদ্ধি মূলত উন্নত ও আগেভাগে শনাক্তকরণ পদ্ধতির ফলাফল।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২২ সালে ৮ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে প্রতি ৩১ জনে একজনের অটিজম শনাক্ত হয়েছে, যা ২০২০ সালের তুলনায় বেশি। সে সময় প্রতি ৩৬ জনে একজনের অটিজম ধরা পড়েছিল। বিশ বছর আগে এই হার ছিল প্রতি ১৫০ জনে একজন।
গবেষণায় আরও বলা হয়, ২০১৮ সালে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে অটিজম শনাক্তের হার ২০১৪ সালে জন্ম নেওয়াদের তুলনায় বেশি, যা আগেভাগে শনাক্তের ধারাবাহিক প্রবণতার ইঙ্গিত দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং পরিচিত টিকা সংশয়বাদী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র এই বৃদ্ধিকে আবারও টিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছেন, যদিও বহু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই সম্পর্ককে খণ্ডন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, 'অটিজম মহামারি ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। এর ঝুঁকি ও ব্যয় আমাদের দেশের জন্য কোভিড-১৯ এর চেয়েও হাজার গুণ বেশি হুমকিস্বরূপ।'
গত সপ্তাহে কেনেডি অটিজম মহামারির কারণ উদঘাটনে একটি বৃহৎ গবেষণা পরিচালনার ঘোষণা দেন, যা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে যে এতে টিকা সম্পর্কিত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবার মাথাচাড়া দিতে পারে।
তবে বিজ্ঞানীরা অটিজমকে ‘মহামারি’ হিসেবে স্বীকার করেন না।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, অটিজম শনাক্তের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক অঞ্চল, লিঙ্গ এবং জাতিগত পার্থক্য বিদ্যমান। আফ্রিকান-আমেরিকান, এশীয় এবং লাতিনো বংশোদ্ভূত শিশুদের মধ্যে শ্বেতাঙ্গ শিশুদের তুলনায় অটিজম বেশি শনাক্ত হচ্ছে।
গবেষণা বলছে, এই পার্থক্যের পেছনে আগেভাগে সেবা পাওয়ার সুযোগ, মূল্যায়নের পদ্ধতি ও নির্ণয়ের ভিন্নতা ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়াও, অঞ্চলভেদে শিশু চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও অটিজম শনাক্তের উপযোগী সুযোগ-সুবিধার প্রাপ্তির ব্যবধানও বিষয়টিতে প্রভাব ফেলে।
অটিজমের নির্দিষ্ট কোনো একক কারণ এখনও জানা যায়নি। এটি একটি জটিল স্নায়বিক অবস্থান যা আচরণ, যোগাযোগ, শেখা ও অন্যদের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, জিনগত ও পরিবেশগত নানা উপাদান এ রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
গত দুই দশকে অপেক্ষাকৃত মৃদু প্রকৃতির অটিজম এবং সংশ্লিষ্ট নানা অবস্থাকে অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (এএসডি) নামক বৃহৎ শ্রেণির আওতায় আনা হয়েছে।