যুক্তরাষ্ট্রে আটক তুর্কি শিক্ষার্থীকে 'তাৎক্ষণিক' মুক্তির নির্দেশ আদালতের

বাসস
প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫, ১৬:১৭ আপডেট: : ১০ মে ২০২৫, ১৭:৩৭

ঢাকা, ১০ মে, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে আটক এক তুর্কি পিএইচডি শিক্ষার্থীকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিচারক।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, শুক্রবার বিচারক উইলিয়াম সেশনস বলেন, ম্যাসাচুসেটসের টাফটস ইউনিভার্সিটির ছাত্রী রুমেইসা ওজতুর্ককে ‘তাৎক্ষণিকভাবে’ মুক্তি দিতে হবে, যদিও তার বিরুদ্ধে অভিবাসন সংক্রান্ত বহিষ্কারের কার্যক্রম চলমান থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরওজতুর্কের স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করে। কারণ হিসেবে বলা হয়—তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পত্রিকা দ্য টাফটস ডেইলি-তে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে গাজায় যুদ্ধসংক্রান্ত ইসরাইলি নীতিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন।

গত ২৫ মার্চ মুখোশধারী ফেডারেল এজেন্টরা তাকে ফুটপাতে থেকে গ্রেফতার করে। সেই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভের ঝড় ওঠে। ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান নিয়েও প্রশ্ন উঠে।

শুক্রবার সরাসরি সম্প্রচারিত শুনানিতে বিচারক সেশনস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত কোটি কোটি অ-নাগরিক এখন হয়তো তাদের প্রথম সংশোধনীর অধিকার (মতপ্রকাশের স্বাধীনতা) প্রয়োগ করতে ভয় পাবেন, যদি তারা ভেবে বসেন যে বাসা থেকে তুলে নিয়ে তাদের আটককেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আদালত মনে করে, ওজতুর্ককে আটক রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দিতে হবে।’

বিচারক জানান, ওজতুর্কের ওপর কোনো ভ্রমণ-নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে না এবং তিনি চাইলে ম্যাসাচুসেটসের নিজ বাসায় ফিরে যেতে পারবেন।

প্রো-প্যালেস্টাইন আন্দোলনে যুক্ত থাকার অভিযোগে আটক অভিবাসী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওজতুর্ক অন্যতম। যদিও তার বিরুদ্ধে এখনও বহিষ্কারের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

টাফটস বিশ্ববিদ্যালয় ওজতুর্কের মুক্তির দাবি জানিয়েছে, যাতে তিনি আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে শিশু বিকাশ বিষয়ে তার পিএইচডি পড়া শেষ করতে পারেন।

ম্যাসাচুসেটস শাখার আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (এসিএলইউ) আইনি পরিচালক জেসি রসম্যান বলেন, ‘৪৫ দিন ধরে রুমেইসা লুইজিয়ানার একটি আটককেন্দ্রে বন্দি ছিলেন। এই সময় তিনি ঘন ঘন এবং ক্রমবর্ধমান অ্যাজমার আক্রমণে ভুগেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার এই আটকাদেশের কোনো যৌক্তিকতা দেখাতে পারেনি। আমরা তাকে স্থায়ীভাবে মুক্ত না করা পর্যন্ত লড়াই থামাবো না।’

গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রো-প্যালেস্টাইন আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে ওঠে, সেগুলোকে টার্গেট করেন ট্রাম্প। তিনি ফেডারেল তহবিল কেটে দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের সক্রিয় করেন।

সমালোচকরা বলেন, এই অভিযান প্রতিশোধমূলক এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত। তবে সমর্থকরা মনে করেন, এটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার ও ইহুদি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে সরাসরি অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা জেলেনস্কির
সাবেক মেয়র আইভী দুই দিনের রিমান্ডে, হত্যাচেষ্টা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট 
গায়ক নোবেলের সঙ্গে ইডেনের সাবেক শিক্ষার্থীর বিয়ে সম্পাদনের নির্দেশ
খুলনায় ‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার 
ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত দুইশ’রও বেশি ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত
স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য আমরা সংগ্রাম করছি : সালাহউদ্দিন আহমেদ
পুলিশ কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করলেন ডিএমপি কমিশনার
সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ : যশোরে ইয়েস কার্ড পেল চার ৫৯ জন
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ২৮ জন আক্রান্ত
দারিদ্র্যের হার কমাতে কাজ করছে সরকার: আলেয়া আক্তার
১০