ঢাকা, ১২ জুন, ২০২৫ (বাসস) : পাকিস্তান সরকার আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াচ্ছে। আগের বছরের তুলনায় এবার ১৭ শতাংশ বেশি অর্থ খরচ করতে চায় দেশটির সরকার। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনার পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। একই সঙ্গে চীন থেকে অস্ত্র ক্রয় বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’।
গতকাল বুধবার পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় নতুন বাজেট সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি প্রকাশ করেছে। নথিগুলো থেকে জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রতিরক্ষা খাতে ৯শ’ কোটি মার্কিন ডলার বরাদ্দের পরিকল্পনা রয়েছে শেহবাজ শরিফ সরকারের। যা পাকিস্তানি মুদ্রায় প্রায় ২ দশমিক ৫৫ ট্রিলিয়ন রুপি। গত অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ২ দশমিক ১৮ ট্রিলিয়ন রুপি।
চরম অর্থনৈতিক সংকটে থাকা পাকিস্তান বর্তমানে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করছে ঋণের সুদ পরিশোধে। এরপরেই সবচেয়ে বড় ব্যয়ের খাত হিসেবে রয়েছে প্রতিরক্ষা।
গার্ডিয়ান জানিয়েছে, গত মাসে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চারদিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্টাপাল্টি হামলায় দুই পক্ষই অংশ নেয়। সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল এপ্রিলে জম্মু-কাশ্মীরে বন্দুকধারীদের হামলার পর। নয়াদিল্লি হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করলেও পাকিস্তান সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সংঘর্ষের সময় পাকিস্তান ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে, যেখানে ব্যবহৃত হয় চীনের তৈরি জেএফ-১৭ ও জেড-১০সি যুদ্ধবিমান। এই ঘটনার পর থেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চীনা অস্ত্রের চাহিদা বেড়ে যায়।
পাশাপাশি, পাকিস্তান সম্প্রতি জানিয়েছে, চীন তাদের ৪০টি জে-৩৫ পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান, কেজে-৫০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং এইচকিউ-১৯ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে।
এদিকে ওয়াশিংটন টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে পাকিস্তানের চীন থেকে অস্ত্র আমদানির হার ৮২ শতাংশ বেড়েছে। এর আগের সময়কাল ২০০৯-২০১২ সালে এই হার ছিল ৫১ শতাংশ।
পাকিস্তানের এই প্রতিরক্ষা খাতের ব্যয়বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতার বাস্তব চিত্র তুলে ধরছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।