ঢাকা, ২১ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : ইসরাইল বুধবার অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি এলাকায় বসতিস্থাপন প্রকল্প অনুমোদন করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সতর্ক করেছে যে, প্রকল্পটি ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কার্যকর করার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ।
জেরুজালেম থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
জেরুজালেমের পূর্বে ই১ নামে পরিচিত প্রকল্পটি প্রায় ১২ বর্গকিলোমিটার জমিতে বসতি নির্মাণের জন্য ইসরাইল দীর্ঘদিন ধরে উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করে আসছে, আন্তর্জাতিক বিরোধিতার কারণে বছরের পর বছর ধরে এই পরিকল্পনাটি স্থগিত ছিল।
সর্বশেষ ঘোষণার নিন্দাও করা হয়েছে, জাতিসংঘ প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, এই বন্দোবস্ত কার্যকরভাবে পশ্চিম তীরকে দুই ভাগে বিভক্ত করবে এবং এর সংলগ্ন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য ‘অস্তিত্বগত হুমকি’ সৃষ্টি করবে।
গত সপ্তাহে, ইসরাইলের কট্টর-ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ জেরুজালেম ও ইসরাইলি বসতি মালে আদুমিমের মধ্যে অবস্থিত অতি-সংবেদনশীল জমিতে প্রায় ৩ হাজার ৪০০টি বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছেন।
মালে আদুমিমের মেয়র গাই ইফ্রাচ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে কিছুক্ষণ আগে, বেসামরিক প্রশাসন ই১ বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।’
তবে, ১৯৬৭ সাল থেকে দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলের সমস্ত বসতি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অবৈধ বলে বিবেচিত। সেগুলোর পরিকল্পনার অনুমতি ইসরাইলিদের কাছে থাকুক বা না থাকুক।
রামাল্লা-ভিত্তিক ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) সর্বশেষ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে।
পিএ-এর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়নের, স্থলে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ন করে এবং এর ভৌগোলিক ও জনসংখ্যাগত ঐক্যকে ভেঙে দেবে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপের ফলে ‘অধিকৃত পশ্চিম তীরকে বিচ্ছিন্ন এলাকা এবং ক্যান্টনে বিভক্ত করা হবে যা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন, যা তাদেরকে প্রকৃত কারাগারের মতো করে তুলবে, যেখানে কেবল ইসরাইলি চেকপয়েন্টের মাধ্যমে এবং সশস্ত্র বসতি স্থাপনকারী মিলিশিয়াদের আতঙ্কের মধ্যে চলাচল করাবে।’
ইসরাইল পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের চলাচলে কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ভ্রমণের জন্য তাদের পূর্ব জেরুজালেম বা ইসরাইলে প্রবেশের জন্য চেকপয়েন্টের মধ্য দিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়।
গুতেরেসের উদ্ধৃতি দিয়ে তার মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইসরাইলের প্রতি ‘অবিলম্বে সকল বসতি স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ করার’ আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি সতর্ক করেছেন যে ই১ প্রকল্প ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের জন্য একটি অস্তিত্বগত হুমকি’ হবে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিও এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এটি ‘একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে দুই ভাগে বিভক্ত করবে এবং আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করবে।’
জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহও এই প্রকল্পের নিন্দা করে বলেছেন, ‘একটি ন্যায়সঙ্গত এবং ব্যাপক শান্তি অর্জনের একমাত্র উপায় হল দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান।’